Tuesday, September 13, 2011

হাদিস

ইবনে উমর (রা) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ (সঃ) বলেছেন ঃ যে ব্যক্তি আল্লাহর নামে আশ্রয় প্রার্থনা করে তাকে আশ্রয় দাও। যে ব্যক্তি আল্লাহর নামে কিছু প্রার্থনা করে তাকে দান কর। যে ব্যক্তি তোমাদের সাথে ভাল ব্যবহার করে তোমরা তার প্রতিদান দাও। প্রতিদান দেবার মত কিছু না থাকলে তার জন্য দোয়া কর, যাতে সে অনুভব করতে পারে যে, তোমরা তার ভাল কাজের প্রতিদান দিয়েছ।
ইবনে আব্বাস (রা) বলেন, রাসূলুল্লাহ (সঃ) বলেছেন ঃ তোমরা জ্ঞান দান করো, দ্বীনকে সহজসাধ্য করো, কঠিন করোনা এবং তোমাদের মধ্যকার কেউ ক্রদ্ধ হলে সে যেন নীরবতা অবলম্বন করে।
 
 

চোগলখুরি

রাসুলুল্লাহ(সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন ,চোগলখোর জান্নাতে প্রবেশ করতে পারবে না। [বুখারি,মুসলিম,আবু দাউদ,তিরমিযি]

অপর এক হাদীসে বর্ণিত, একবার রাসুল(সা) দুটি কবরের পাশ দিয়ে যাবার সময় বললেন, এ দুটি কবরের অধিবাসীরা আযাবরত অবস্থায় ভুগছে। কিন্তু কোন বড় ধরণের গুনাহের জন্য তারা শাস্তিতে ভুগছে না। একজন পেশাব করে ভালোমত পবিত্র হত না। আর একজন চোগলখুরি করে বেড়াত।
এরপর তিনি খেজুরের দুটি কাঁচা ডাল নিয়ে উভয়ের কবরে একটি করে গেড়ে দিয়ে বললেন, ডাল দুটি না শুকানো পর্যন্ত হয়তো এদের শাস্তি কম হবে।

রাসুল(সা) বলেছেন, তোমরা সবচেয়ে অধম লোক দেখতে পাবে সেই ব্যক্তিকে, যে বিভিন্ন জনের কাছে গিয়ে নিজেকে বিভিন্নভাবে বা বিভিন্ন আকারে প্রকাশ করে। আর যে ব্যক্তি পৃথিবীতে দ্বিমুখী আচরণ করবে , কিয়ামতের দিন আল্লাহ তাকে দুটি আগুনের জিহ্বা দিবেন। [বুখারি,মুসলিম,মুয়াত্তা]

 

Monday, September 12, 2011

ভূমিকা


আমি  কোন অনুবাদক বা আলেম নই। একজন সাধারন মানুষ মাত্র। একমাত্র আল্লাহ’র সন্তুষ্টি অর্জনের উদ্দেশ্যে বাংলা ভাষাভাষি মানুষের কাছে আল্লাহ ও তাঁর রাসুলের বানী পৌঁছে দেওয়ার লক্ষ্যে আমার এই ব্লগ লেখা। এখানে আমি বিভিন্ন বই, পত্রিকা, ওয়েব সাইট, ফেসবুক গ্রুপ থেকে তথ্যগুলো সংগ্রহ করেছি মাত্র। সকলের কাছ থেকে অনুমতি নেওয়া আমার পক্ষে সম্ভব হয়নি—তার জন্য আমি সবার কছে অগ্রিম ক্ষমা চেয়ে নিচ্ছি। যদি এতে কোন ভুল-ত্রুটি থাকে তবে তা ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখে আমাকে ভুলগুলো শুদ্ধ করার সহযোগিতা করার জন্য সকলের কাছে অনুরোধ করা হলো এবং সেই সাথে আরও তথ্য দিতে সহযোগিতা করার জন্য অনুরোধ করছি।

আল্লাহ’র নিকট আকুল আবেদন জানাচ্ছি, তিনি যেন আমার এই ক্ষুদ্র প্রয়াসটুকু কবুল ও মজ্ঞুর করেন এবং আমাদের সকলকে হেদায়েত প্রাপ্ত করেন। সাথে সাথে তিনি যেন আমাদের পিতা-মাতা, দাদা-দাদী, নানা-নানী ও তার উর্ধের সকলকে ক্ষমা করেন ও বেহেস্ত নসিব করেন এবং আমাদের সন্তান, নাতি-নাতনী ও তাদের নিন্মের সকলকে সিরাতুল মুস্তাকিম নসিব করেন, আমাদের সকলেকে তাঁর নেককার বান্দাদের মধ্যে গন্য করেন এবং আমাদের অভিভাবক্ত্ব গ্রহণ করেন। আমিন।

আমার এই ব্লগ আমি আমার মা-বাবা এবং আমার একমাত্র আদরের সন্তান ‘সামি’কে উসর্গ করছি।

Sunday, September 11, 2011

সালাত

আবূ হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন: আমি রাসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লামকে বলতে শুনেছি, তিনি বলেছেন: “যখন সালাত আরম্ভ হয়ে যায়, তখন দৌড়ে গিয়ে তাতে শামিল হয়ো না। বরং ধীরস্থিরভাবে হেঁটে এসে তাতে শামিল হও। যতটুকু পাও আদায় করে নাও এবং যতটুকু ছুটে যায় পরে পূরণ করে নাও।” [বুখারী: ৯০৮, মুসলিম: ১৩৫৯]
 
রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন: “যে ব্যক্তি আমার ন্যায় এরূপ অযূ করে একাগ্রচিত্তে দু’রাকা’আত সালাত আদায় করবে, তার পূর্বের সকল গোনাহ্ ক্ষমা করে দেয়া হবে।” [হাদীসটি হুমরান ও উসমান রাদিয়াল্লাহু 'আনহুমা থেবে র্বণিত, বুখারী: ১৫৯, মুসলিম: ৫৩৯]
  
হযরত উসমান ইবনে আবুল আস রাঃ হতে বর্নিত|
তিনি বলেন, একদা আমি বললাম, হে আল্লাহর রাসূল সাঃ (আমি যখন সলাতে দন্ডায়মান হই তখন) শয়তান আমার মাঝে এবং আমার সলাত ও কিরায়াতের মাঝে অন্তরায় হয়ে দাঁড়ায় এবং এলোমেলো বাঁধিয়ে দেয়( এমতাবস্হায় আমার করনীয় কি?) তার কথা শুনে রাসূলুল্লাহ সাঃ বললেন, সে একটি শয়তান ( যে সলাত আদায়কারীদের কে বিভিন্ন কুমন্ত্রনা দিয়ে থাকে) , যাকে " খিনযাব " বলা হয় | তুমি যখন তার উপস্হিতি অনুভব করবে , তখন তার কুমন্ত্রনা থেকে (রেহাই পাবার জন্য) আল্লাহর নিকট আশ্রয় প্রার্থনা করবে এবং (খিনযাবের প্রতি ধিক্কার স্বরূপ) তোমার বাম দিকে তিনবার থুথু নিক্ষেপ করবে |
হযরত উসমান ইবনে আবুল আস রাঃ বলেন , অতঃপর আমি এরূপ করলাম | ফলে আল্লাহ তা'য়ালা আমার নিকট হতে শয়তানকে দূর করে দিলেন |
সূত্র : ১. সহীহ মুসলিম |  ২.মিশকাত:কিতাবু ল ঈমান |

আবু কাতাদা ইবন রিবঈ (রা•) বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ মহান আল্লাহ বলেন- নিশ্চিত আমি আপনার উম্মাতের উপর পাঁচ ওয়াক্ত নামায ফরয করেছি এবং আমি নিজের পক্ষ থেকে প্রতিশ্রুতি দিচ্ছিঃ যে ব্যক্তি তা সঠিক ওয়াক্তসমূহে আদায় করবে- আমি তাকে জান্নাতে প্রবেশ করাব। আর যে ব্যক্তি তার হেফাজত করে না- তার জন্য আমার পক্ষ থেকে কোন প্রতিশ্রুতি নেই। (আবু দাউদ)
 
হযরত আনাস ইবনে মালেক (রা) নবী করীম () থেকে বর্ণনা করেছেন তিনি বলেছেন, কেউ কোন নামাযের কথা ভুলে গেলে তা স্মরণ হওয়া মাত্র আদায় করে নিবে নামাযের এটা ছাড়া অন্য কোন কাফফারা নেই কেননা, আল্লাহ বলেন, আমাকে স্মরণের জন্য নামায কায়েম কর[বোখারী শরীফ ¤ ৫৬২]
 
 
 

দু’মুখো ব্যক্তি সর্বনিকৃষ্ট



আবূ হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন: “তোমরা মানব জাতিকে খনির মত পাবে। তাদের মধ্যে (ইসলাম গ্রহণের পূর্বে) জাহেলী যামানায় যারা সর্বোত্তম, ইসলামেও তারা সর্বোত্তম। তবে শর্ত হলো যদি তারা (ইসলামী) জ্ঞান অর্জন করে। আর তোমরা তাদের মধ্যে (ইসলামের) এ নেতৃত্বের যে আসনে সর্বোত্তম ব্যক্তি হিসেবে তাকেই পাবে, যে (পূর্বে) ইসলামের ঘোর দুশমন ছিল। আর মানুষের মাঝে সবচেয়ে নিকৃষ্ট সেই দ্বিমুখী ব্যক্তিকেই পাবে, যে এক বেশে এদের কাছে আসে এবং আরেক বেশে অন্যদের কাছে যায়।” [মুত্তাফাকুন 'আলাইহি, বুখারী: ৩৪৯৩, মুসলিম: ২৫২৬]

হাদিস

“হালাল উপার্জন থেকে যে খেজুর পরিমাণ সদকা করল, আর আল্লাহ হালাল ব্যতীত গ্রহণ করেন না, আল্লাহ তা ডান হাতে গ্রহণ করেন, অতঃপর সদকাকারীর জন্য তা বৃদ্ধি করতে থাকেন, যেমন তোমরা অশ্বশাবক লালন কর অতঃপর পাহাড়ের ন্যায় পরিণত হয়”[ বুখারি: (১৪১০), মুসলিম: (১০১৬)]
 
“স্বর্ণ ও রূপার এমন কোন মালিক নেই, যে এর হক প্রদান করে না, যার জন্য কিয়ামতের দিন আগুনের পাত তৈরি করা হবে না, যা জাহান্নামের আগুনে তাপ দিয়ে অতঃপর তার পার্শ্ব, কপাল ও পৃষ্ঠদেশ সেক দেয়া হবে। যখন তা ঠাণ্ডা হবে আবার গরম করা হবে, সে দিনের পরিমাণ হবে পঞ্চাশ হাজার বছর, যতক্ষণ না বান্দাদের ফয়সালা সমাপ্ত হয়”[ মুসলিম: (৯৮৭)]
 
আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন: “আল্লাহ যাকে সম্পদ দান করেছেন, অতঃপর সে তার যাকাত প্রদান করল না, কিয়ামতের দিন তার জন্য বিষধর সাপ সৃষ্টি করা হবে, যার দুটি চোঁয়াল থাকবে, যা দ্বারা সে তাকে কিয়ামতের দিন পেঁছিয়ে ধরবে, অতঃপর তার দু’চোয়াল পাকড়ে বলবে: আমি তোমার সম্পদ, আমি তোমার সঞ্চিত ধন”[ বুখারি: (৮৪০৩)]
 
ইবনে মাসউদ রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু হতে বর্ণিত হয়েছে, তিনি বলেন- রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন:
“কোন মুসলিমের রক্তপাত করা তিনটি কারণ ব্যতীত বৈধ নয়- বিবাহিত ব্যক্তি যদি ব্যভিচার করে, আর যদি প্রাণের বদলে প্রাণ নিতে হয়। আর যদি কেউ স্বীয় দ্বীনকে পরিত্যাগ করে মুসলিম জামা‘আত হতে আলাদা হয়ে যায়।”
[বুখারী: ৬৮৭৮, মুসলিম: ১৬৭৬]
 
আনাস রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন: “তিনটি জিনিস মৃত ব্যক্তির অনুসরণ করে; তার পরিবার-পরিজন, তার ধন-সম্পদ এবং তার আমল(কার্যক্রম)। এসবের দু’টি ফিরে আসে এবং তার আমল তার সাথে থেকে যায়।” [মুত্তাফাকুন 'আলাইহি, বুখারী: ৬০৩৩, মুসলিম: ৫২৬০, মাকতাবাতুস্ শামেলাহ্, ২য় সংস্করণ]
 
ইমরান বিন হুসাইন রাদিয়াল্লাহু ‘আনহুমা থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন: “লজ্জা কল্যাণই নিয়ে আসে।” [বুখারী: ৬১১৭, মুসলিম: ৩৭] মুসলিমের অপর বর্ণনায় আছে: “লজ্জার সম্পূর্ণটুকু মঙ্গলই মঙ্গল,” অথবা বলেছেন: “সম্পূর্ণ লজ্জাই মঙ্গলজনক।”
 
আবু হামযাহ্ আনাস ইবন মালেক রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু-রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লামের খাদেম-হতে বর্ণিত হয়েছে, নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন:
“তোমাদের মধ্যে কেউ ততক্ষণ পর্যন্ত মুমিন হতে পারবে না, যতক্ষণ পর্যন্ত না সে তার ভাইয়ের জন্য তা-ই পছন্দ করবে যা সে নিজের জন্য পছন্দ করে।” [বুখারী: ১৩, মুসলিম: ৪৫]
 
হযরত আবূ হুরাইরা (রা) হতে বর্ণিত আছে, তিনি বলেন, মহানবী (স) ইরশাদ করেছেন-যখন
মানুষ মারা যায়, তখন মানুষের আমলের (সাওয়াবের) ধারা বন্ধ হয়ে যায়। কিন্তু তিন ধরনের আমলের সাওয়াব সদা- সর্বদা অব্যাহত থাকে। ১.সাদকায়ে জারিয়াহ ২. এমন ইলম, (বিদ্যা) যার দ্বারা মানুষের উপকার সাধিত হয় এবং ৩.সুসন্তান, যে তার পিতা-মাতার জন্য দু’আ করে। (তিরমিযী, হাদীস নং-১২৯৭, নাসায়ী, হাদীস নং- ৩৫৯১)
 
আবু হোরায়রা রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু হতে বর্ণিত হয়েছে, তিনি বলেন-রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন: “অনর্থক অপ্রয়োজনীয় বিষয় ত্যাগ করাই একজন ব্যক্তির উত্তম ইসলাম।”   [হাদীসটি হাসান। তিরমিযী: ২৩১৮, ইবনে মাজাহ: ৩৯৭৬]
 
আবূ হোরায়রা রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু হতে বর্ণিত হয়েছে- এক ব্যক্তি রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লামকে বলল: আমাকে কিছু উপদেশ দিন। তিনি বললেন: “রাগ করো না”। লোকটি বার বার রাসূলের নিকট উপেদশ চায় আর রাসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন: “রাগ করো না”। [বুখারী: ৬১১৬]
 
আবু সায়ীদ খুদরী রা. থেকে বর্ণিত অন্য হাদীসে আছে, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, যে ব্যক্তি তিনটি মেয়েকে, অন্য রেওয়ায়েতে আছে, অথবা দুটি মেয়েকে লালন-পালন করে তাদেরকে আদব শিক্ষা দেয়, বিবাহের ব্যবস্থা করে এবং তাদের প্রতি সুন্দর আচরণ করে সে জান্নাতের অধিকারী হবে। (সুনানে আবু দাউদ, হাদীস : ৫১৪৭)

হাদিস

কোনো বান্দাহ ততোক্ষণ পর্যন্ত মুসলিম হয়না , যতোক্ষণ তার মন ও যবান মুসলিম না হয়। [ তাগরীব ]
 
উমার রাদিয়াল্লাহু 'আনহু হতে বর্ণিত হয়েছে, তিনি বর্ণনা করেছেনঃ

একদিন আমরা রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়াসাল্লামের নিকট বসেছিলাম, এমন সময় হঠাৎ এক ব্যক্তি আমাদের সামনে উপস্থিত হয় যার কাপড় ছিল ধবধবে সাদা, চুল ছিল ভীষণ কালো; তার মাঝে ভ্রমণের কোন লক্ষণ পরিলক্ষিত হচ্ছিল না। আমাদের মধ্যে কেউ তাকে চিনতে পারে নাই। সে নবী সাল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়াসাল্লামের নিকটে গিয়ে বসে, নিজের হাঁটু তার হাঁটুর সঙ্গে মিলিয়ে নিজের হাত তার উরুতে রেখে বললেনঃ "হে মুহাম্মাদ, আমাকে ইসলাম সম্পর্কে বলুন"।
রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ "ইসলাম হচ্ছে এই- তুমি সাক্ষ্য দাও যে, আল্লাহ্ ছাড়া আর কোন সত্য ইলাহ্ নেই এবং মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়াসাল্লাম) আল্লাহর রাসূল, সালাত প্রতিষ্ঠা কর, যাকাত আদায় কর, রমাদানে সওম সাধনা কর এবং যদি সামর্থ থাকে তবে (আল্লাহর) ঘরের হজ্জ কর।
তিনি (লোকটি) বললেনঃ "আপনি ঠিক বলেছেন"। আমরা বিস্মিত হলাম, সে নিজে তার নিকট জিজ্ঞাসা করেছে আবার নিজেই তার জবাবকে ঠিক বলে ঘোষণা করছে। এরপর বললঃ "আচ্ছা, আমাকে ঈমান সম্পর্কে বলুন"।
তিনি (রাসূল) বললেনঃ "তা হচ্ছে এই- আল্লাহ্, তাঁর ফিরিশ্তাগণ, তাঁর কিতাবসমূহ, তাঁর রাসূলগণ ও আখেরাত বিশ্বাস করা এবং ভাগ্যের ভাল-মন্দকে বিশ্বাস করা।
সে (আগুন্তুক) বললঃ "আপনি ঠিক বলেছেন"। তারপর বললঃ "আমাকে ইহসান সম্পর্কে বলুন"।
তিনি বলেনঃ "তা হচ্ছে এই- তুমি এমনভাবে আল্লাহর ইবাদাত কর যেন তুমি আল্লাহকে দেখতে পাচ্ছ, আর তুমি যদি তাঁকে দেখতে নাও পাও তবে তিনি তোমাকে দেখছেন"।
সে বললঃ "আমাকে কেয়ামত সম্পর্কে বলুন"।
তিনি (রাসূল) বললেনঃ "যাকে জিজ্ঞাসা করা হচ্ছে সে জিজ্ঞাসাকারী অপেক্ষা বেশী কিছু জানে না"।
সে (আগন্তুক) বললঃ "আচ্ছা, তার লক্ষণ সম্পর্কে বলুন"। তিনি (রাসূল) বললেনঃ "তা হচ্ছে এই- দাসী নিজের মালিককে জন্ম দেবে, সম্পদ ও বস্ত্রহীন রাখালগণ উঁচু উঁচু প্রাসাদে দম্ভ করবে"।
তারপর ঐ ব্যক্তি চলে যায়, আর আমি আরো কিছুক্ষণ বসে থাকি। তখন তিনি (রাসূল) আমাকে বললেনঃ "হে উমার, প্রশ্নকারী কে ছিলেন, তুমি কি জান? আমি বললামঃ "আল্লাহ্ ও তাঁর রাসূল অধিক ভাল জানেন"। তিনি বললেনঃ "তিনি হলেন জিবরীল। তোমাদেরকে তোমাদের দ্বীন শিক্ষা দিতে তোমাদের কাছে এসেছিলেন।" [সহীহ্ মুসলিমঃ ৮]
 
''যে ব্যক্তি নিজের মাল রক্ষা করতে গিয়ে মারা যায় সে শহীদ,যে নিজের পরিবার রক্ষা করতে গিয়ে মারা যায় সে শহীদ, যে নিজের দ্বীন রক্ষা করতে গিয়ে মারা যায় সে শহীদ এবং যে নিজের প্রাণ রক্ষা করতে গিয়ে মারা যায় সেও শহীদ।''
[আবু দাঊদ, নাসাঈ, তিরমিযী]
 
আবূ মাসউদ উকবাহ্ ইবন আমর আল-আনসারী আল-বদরী রাদিয়াল্লাহু হতে বর্ণিত হয়েছে- তিনি বলেছেন, রাসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেন:
"অতীতের নবীগণের কাছ থেকে মানুষ একথা জানতে পেরেছে- যদি তোমার লজ্জা না থাকে তাহলে যা ইচ্ছা তাই কর।"
[বুখারী: ৩৪৮৩]
 
~~~প্রত্যেককেই নিজ দায়িত্ব সম্পর্কে জবাবদিহি করতে হবে~~~
ইবনে উমার রাদিয়াল্লাহু ‘আনহুমার বর্ণনা করেছেন। তিনি বলেন:
“আমি রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লামকে বলতে শুনেছি: তোমাদের প্রত্যেকেই রক্ষণাবেক্ষণকারী(বা দায়িত্বশীল) এবং তোমাদের প্রত্যেকেই তার অধীনস্থদের রক্ষণাবেক্ষণ সম্পর্কে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে। পুরুষ তার পরিবার ও সংসারের জন্য দায়িত্বশীল এবং তাকে তার রক্ষণাবেক্ষণ ও দায়িত্বপালন সম্পর্কে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে। স্ত্রীলোক তার স্বামীর ঘরের রক্ষণাবেক্ষণকারিনী এবং তাকে সে সম্পর্কে জবাবদিহি করতে হবে। খাদেম তার মনিবের সম্পদের রক্ষণাবেক্ষণকারী এবং তাকে তার সে দায়িত্বপালন সম্পর্কে জবাবদিহি করতে হবে। অতএব তোমাদের প্রত্যেকেই দায়িত্বশীল এবং প্রত্যেককে নিজ নিজ দায়িত্ব পালন সম্পর্কে জবাবদিহি করতে হবে।” [বুখারী: ৭/৪১(৫২০০) ও মুসলিম: ৬/৭(১৮২৯)]
 
 
রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লামের স্নেহাস্পদ দৌহিত্র আবু মুহাম্মাদ হাসান ইবন আলী ইবন আবী তালিব রাদিয়াল্লাহু ‘আনহুমা হতে বর্ণিত হয়েছে, তিনি বলেছেন: “আমি রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লামের নিকট হতে এ কথা শুনে স্মরণ রেখেছি: সন্দেহযুক্ত বিষয় বর্জন করে সন্দেহমুক্ত বিষয় গ্রহণ কর।”
[তিরমিযী: ২৫২০, নাসায়ী: ৫৭১১, আর ইমাম তিরমিযী বলেছেন: হাদীসটি হাসান সহীহ]
 
আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু হতে বর্ণিত হয়েছে, তিনি বলেছেন- রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন:
আল্লাহ্ তা‘আলা পাক-পবিত্র, তাই তিনি কেবল পবিত্র জিনিসই কবূল করে থাকেন। আল্লাহ্ তা‘আলা মুমিনদের ঐ কাজই করার হুকুম দিয়েছেন যা করার হুকুম তিনি রাসূলদেরকে দিয়েছেন। আল্লাহ্ তা‘আলা বলেছেন: ((হে রাসূলগণ! পবিত্র বস্তু আহার করুন এবং নেক আমল করুন।)) আল্লাহ্ তা‘আলা আরো বলেছেন: ((হে মুমিনগণ! আমরা তোমাদের যে পবিত্র জীবিকা দান করেছি তা থেকে আহার কর।))
তারপর তিনি (রাসূলুল্লাহ্) এমন এক ব্যক্তির কথা উল্লেখ করলেন যে ব্যক্তি দীর্ঘ সফরে বের হয় এবং তার চুলগুলো এলোমেলো হয়ে আছে ও কাপড় ধুলোবালিতে ময়লা হয়ে আছে। অতঃপর সে নিজের দুই হাত আকাশের দিকে তুলে ধরে ও বলে: হে রব! হে রব! অথচ তার খাদ্য হারাম, তার পানীয় হারাম, তার পোষাক হারাম, সে হারামভাবে লালিত-পালিত হয়েছে; এ অবস্থায় কেমন করে তার দো‘আ কবূল হতে পারে।
[মুসলিম: ১০১৫]
 
 

Saturday, September 10, 2011

হাদিস

শব্দের পরিচিতিঃ আরবী "সিয়াম" শব্দটি "সওম" শব্দের বহুবচন এবং এটি একটি কুরআনিক শব্দ। উপমহাদেশে এটি "রোজা" নামেই বেশী পরিচিত যা একটি ফারসী শব্দ। "সওম" এর শাব্দিক অর্থ হলো বিরত থাকা, আত্ন সংযম এবং কঠোর সাধনা। যে ব্যক্তি সিয়াম পালন করে তাকে "সাঈম" বলা হয়। সকল ক্ষেত্রে রোজা শব্দটি পরিহার করে সিয়াম শব্দটি ব্যবহার করা আমাদের জন্য উত্তম।

রাসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) ইরশাদ করেন, যে ব্যক্তি ক্বদরের রাত অনুসন্ধান করতে চায় সে যেন (রামাদানের) শেষ দশকে তা অনুসন্ধান করে। [মুসলিম, ২৬৩২]

হযরত আয়েশা (রা) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) রামাদানের শেষ দশকে ইবাদাতের জন্য যেরকম কঠোর সাধনা করতেন অন্য কোন সময়ে এটা করতেন না। [মুসলিম, ২৬৫৪]

নবী করীম (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেন, যে ব্যক্তি রামাদানে ঈমানের সাথে সওয়াব লাভের আশায় সাওম পালন করে তার পূর্ববর্তী গুনাহ সমূহ মাফ করে দেয়া হয় এবং যে ব্যক্তি ঈমানের সাথে সওয়াব লাভের আশায় লাইলাতুল ক্বাদরে রাত জেগে দাঁড়িয়ে সালাত আদায় করে তার পূর্ববর্তী গুনাহ সমূহ মাফ করে দেয়া হয়। [বুখারী, ১৮৮৭]

আয়িশা (রা) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলাল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) রামাদানের শেষ দশকে ই'তিকাফ করতেন এবং বলতেন, তোমরা রামাদানের শেষ দশকে লাইলাতুল কাদ্‌র তালাশ করো। [বুখারী, ১৮৯৩]

যখন রামাদানের শেষ দশক আসত তখন নবী করীম (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) তাঁর লুঙ্গি কষে নিতেন (বেশী বেশী ইবাদাতের প্রস্তুতি নিতেন) এবং রাত্র জেগে থাকতেন ও পরিবার পরিজনকে জাগিয়ে দিতেন। [বুখারী, ১৮৯৭]

রাসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন, যখন তোমাদের কেউ রোযা রাখে তখন সে যেন খেজুর দ্বারা ইফ্‌তার করে। আর যদি সে খেজুর না পায় তবে পানি দ্বারা ইফ্‌তার করে, কারণ পানি পবিত্র। [আবূ দাউদ, ২৩৪৭]

রাসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) ইরশাদ করেন, যদি কোন ব্যাক্তি সওম পালনরত অবস্থায় অনিচ্ছাকৃতভাবে বমি করে তার জন্য কাযা আদায় করা জরুরী নয়। অবশ্য যদি কেউ ইচ্ছাকৃতভাবে বমি করে সে যেন কাযা আদায় করে। [আবূ দাঊদ, ২৩৭২]

রাসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) একটি হাদিসে উল্লেখ করেন, নিশ্চই সওম পালনকারীর মুখের গন্ধ আল্লাহ্‌র কাছে মিস্‌কের গন্ধের চাইতেও উৎকৃষ্ট। আল্লাহ্‌ তাআলা বলেন, সে আমার জন্যই আহার, পান ও কামাচার পরিত্যাগ করে। সিয়াম আমার জন্যই। তাই এর পুরস্কার আমি নিজেই দান করবো। আর প্রত্যেক নেক কাজের বিনিময় দশ গুন। [বুখারী, ১৭৭৩]

রাসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন, তোমরা সেহ্‌রী খাবে কারণ, সেহ্‌রীতে বরকত রয়েছে।[মুসলিম, ২৪১৫]

তিনি আরোও বলেন, আমাদের রোযা আর ইহুদী ও খৃষ্টান সম্প্রদায়ের রোযার মধ্যে পার্থক্য হলো সেহ্‌রী খাওয়া। [মুসলিম, ২৪১৬]

রাসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন, লোকেরা যতদিন যাবত ওয়াক্‌ত হওয়া মাত্র ইফতার করবে, ততদিন তারা কল্যানের উপর থাকবে। [বুখারী, ১৮৩৩]

একদা নবী করীম (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর নিকট জনৈক ব্যক্তি আগমন করে বলে, ইয়া রাসূলাল্লাহ ! আমি রোযা থাকা অবস্থায় ভুলবশত পানাহার করে ফেলেছি। তিনি বলেন, আল্লাহ্‌ তাআলা তোমাকে পানাহার করিয়েছেন অর্থাৎ এতে রোযা নষ্ট হয়নি। [আবূ দাউদ, ২৩৯০]

সেহ্‌রী খেতে খেতে আযান হয়ে গেলেও পাত্রের খাবার শেষ করা সুন্নাত রাসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ইরশাদ করেন, তোমাদের কেউ যখন ফজরের আযান শ্রবণ করে আর এ সময়ে তার হাতে খাদ্যের পাত্র থাকে, যে যেন আযানের কারণে খাদ্য গ্রহণ বন্ধ না করে- যতক্ষন না তদ্বারা স্বীয় প্রয়োজন পূর্ণ করে। [আবূ দাউদ, ২৩৪২]

রাসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন, যখন তোমাদের কেউ রোযা রাখে তখন সে যেন খেজুর দ্বারা ইফ্‌তার করে। আর যদি সে খেজুর না পায় তবে পানি দ্বারা ইফ্‌তার করে, কারণ পানি পবিত্র। [আবূ দাউদ, ২৩৪৭] রাসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন, যে ব্যক্তি মিথ্যা বলা ও সে অনুযায়ী আমল বর্জন করেনি তার এ পানাহার পরিত্যাগ করায় আল্লাহ্‌র কোন প্রয়োজন নেই। [বুখারী, ১৭৮২]

রাসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন, যে ব্যক্তি ঈমানসহ সওয়াবের আশায় রামাদানে সিয়াম পালন করবে তার অতীতের সব গুনাহ মাফ করা হবে। [বুখারী, ১৭৮০ অংশবিশেষ]

হযরত উসমান (রা) যখন কোন কবরের সামনে দাঁড়াতেন তখন তিনি খুবই কাঁদতেন, এমনকি তার দাঁড়ি ভিজে যেত। তাকে বলা হলো, আপনার কাছে জান্নাত-জাহান্নামের কথা বলা হলে আপনি কাঁদেন না অথচ এই ক্ষেত্রে এত কাঁদেন কেন ? তখন তিনি বললেন, রাসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, আখিরাতের মঞ্জিল সমূহের প্রথম মঞ্জিল হলো কবর। যে ব্যক্তি এখানে মুক্তি পেয়ে যাবে তার জন্য পরবর্তী মঞ্জিল সমূহ আরোও সহজ হয়ে যাবে। আর যে ব্যক্তি এখানে মুক্তি পাবে না তার জন্য পরবর্তী মঞ্জিল গুলো আরোও কঠিন হয়ে যাবে। তিনি আরোও বলেন, রাসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন, আমি এমন কোন দৃশ্য কখনও দেখিনি যার থেকে কবর আরো ভীতিকর নয়। [তিরমিযী, ২৩১১]

Hadith

রাসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেন, বনী ইসরাঈলরা বাহাত্তর দলে বিভক্ত হয়ে পড়েছিল আর আমার উম্মত তিহাত্তর দলে বিভক্ত হবে। তাদের মধ্যে একটি দল ছাড়া আর সব দলই জাহান্নামী হবে। সাহাবাগণ জিজ্ঞাসা করলেন, সেই একটি দল কারা ? তিনি বললেন, তারা হচ্ছে সেই লোক যারা অনুসরণ করবে আমার এবং আমার সাহাবীদের আদর্শ। [তিরমিযী, ২৬৪১]

রাসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেন, কাজ নিয়তের সাথে সম্পর্কিত। এবং প্রত্যেক মানুষের প্রাপ্য তার নিয়ত অনুযায়ী। [বুখারী, ৫২]

আবূ কাতাদা ইব্‌ন রিব'আ আনসারী (রা) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ইরশাদ করেছেন, তোমাদের কেউ মসজিদে প্রবেশ করলে দু'রাকআত সালাত (তাহিয়্যাতুল-মাসজিদ) আদায় করার আগে বসবে না। [সহীহ বুখারী, হাদিস নং ১০৯৪]

বুরায়দা (রা) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলাল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, আমাদের এবং কাফিরদের মধ্যে পার্থক্যকারী আমল হলো সালাত। যে সালাত ছেড়ে দিলো সে কুফরী করল। [নাসাঈ শরীফ ৪৬৪]

উযু করার আগে 'বিস্‌মিল্লাহ্‌' বলতে আমরা অনেকেই ভুলে যাই আবূ হুরায়রা (রা) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেছেন, রাসূলাল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ইরশাদ করেন, ঐ ব্যক্তির নামায আদায় হয় না যে সঠিক ভাবে উযু করে না এবং ঐ ব্যক্তির উযু হয় না যে আল্লাহ্‌র নাম স্মরণ করে না (অর্থাৎ বিস্‌মিল্লাহ্‌ বলে না)। [বুখারী, মুসলিম, তিরমিযী, নাসাঈ, ইবনে মাজা]

রাসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন, জুমু'আর দিন তোমরা আমার উপর বেশী বেশী দরূদ পড়। কেননা তোমাদের দরূদ আমার কাছে পেশ করা হয়। [নাসাঈ শরীফ]

রাসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেন, তাদের চেহারা অগ্নিদগ্ধ হবে, উপরের ঠোটটি কুকড়ে মাথার মাঝ বরাবর চলে যাবে, আর নিচের ঠোটটি ঝুলে পড়ে নাভিতে গিয়ে বাড়ি খাবে। [তিরমিযী, ২৫৮৮]

ঈদুল ফিত্‌রের দিন বের হওয়ার আগে আহার করা সুন্নাত আনাস ইব্‌ন মালিক (রা) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) ঈদুল ফিত্‌রের দিন কিছু খেজুর না খেয়ে বের হতেন না। অপর এক রেওয়ায়াতে আনাস (রা) নবী করীম (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) থেকে বর্ণনা করেন যে, তিনি খেজুর বেজোড় সংখ্যক খেতেন। [বুখারী, ৯০৫]

রাসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) ঈদের সালাত আদায়ের জন্য এক রাস্তা দিয়ে যেতেন এবং অন্য রাস্তা দিয়ে প্রত্যাবর্তন করতেন। [বুখারী, মুসলিম]

রাসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) ঈদ সম্পর্কে বলতে গিয়ে ইরশাদ করেন, প্রত্যেক জাতির জন্য উৎসবের ব্যবস্থা আছে। আর এটা (ঈদ) হচ্ছে আমাদের উৎসবের দিন। [মুসলিম, ১৯৩৮ অংশবিশেষ]

রাসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) ইরশাদ করেন, যে ব্যক্তি ক্বদরের রাত অনুসন্ধান করতে চায় সে যেন (রামাদানের) শেষ দশকে তা অনুসন্ধান করে। [মুসলিম, ২৬৩২]

গোসল

আয়িশা (রা) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) যখন জানাবাতের অবস্থায় (গোসল ফরজ হলে) ঘুমানোর ইচ্ছা করতেন তখন তিনি লজ্জাস্থান ধুয়ে সালাতের উযুর মত উযু করে নিতেন। [বুখারী, ২৮৪]

মায়মূনা (রা) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) সালাতের উযুর ন্যায় উযু করলেন, অবশ্য পা দুটো ছাড়া এবং তাঁর লজ্জাস্থান ও যে যে স্থানে নাপাক লেগেছে তা ধুয়ে নিলেন। তারপর নিজের উপর পানি ঢেলে দেন। তারপর সেখান থেকে সরে গিয়ে পা দুটো ধুয়ে নেন। এই ছিলো তাঁর জানাবাতের* গোসল। [বুখারী, ২৪৭]

গোসলের পর উযু করার প্রয়োজন আছে কি ? ইসমাঈল ইব্‌ন মুসা (র)......আয়েশা (রা) থেকে বর্ণনা করেন যে, নবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) গোসলের পর উযু করতেন না। [তিরমিযী, ১০৭] ইমাম আবূ ঈসা তিরমিযী (র) বলেন, হাদিসটি হাসান ও সহীহ্‌।