Wednesday, October 24, 2012

কুরবানীতে শরীক হওয়া

• আব্দুল্লাহ ইবনু আববাস (রা.) বলেন, ‘আমরা রাসূল (সা.)-এর সাথে এক সফরে ছিলাম। এমতাবস্থায় কুরবানীর ঈদ উপস্থিত হলো। তখন আমরা সাতজনে একটি গরু ও দশজনে একটি উটে শরীক হলাম।
(তিরমিযী, নাসাঈ, ইবনু মাজাহ, মিশকাত, হা/১৪৬৯; সনদ সহীহ)।

• জাবির (রা.) বলেন, ‘আমরা আল্লাহর রাসূল (সা.) এর সাথে হজ্জ ও উমরার সফরে সাথী ছিলাম।..... তখন আমরা একটি গরু ও উটে সাতজন করে শরীক হয়েছিলাম।
(সহীহ মুসলিম, হা/১৩১৮) সফরে সাত বা দশজন মিলে একটি পরিবারের ন্যায়, যাতে গরু ও উটের মতো বড় পশু যবেহ ও কুটাবাছা এবং গোশত বণ্টন সহজ হয়। জমহুর বিদ্বানগণের মতে হজ্জের হাদীর ন্যায় কুরবানীতেও শরীক হওয়া চলবে। (মর‘আত, ২/৩৫৫, ৫/৮৪)।

• আনাস (রা.) বলেন, রাসূলুল্লাহ (সা.) হজ্জের সফরে মিনায় নিজ হাতে ৭টি উট (অন্য বর্ণনায় এরও অধিক) দাড়ানো অবস্থায় ‘নহর’ করেছেন এবং মদীনায় (মুক্বীম অবস্থায়) দু‘টি সুন্দর শিংওয়ালা খাসি কুরবানী করেছেন। আয়েশা (রা.) বলেন, বিদায় হজ্জের সময় রাসূলুল্লাহ (সা.) তার সফরসঙ্গী স্ত্রী ও পরিবারের পক্ষ হতে একটি গরু কুরবানী করেন।
(বুখারী, ১/২৩১; সহীহ আবু দাউদ, হা/১৫৩৯) অবশ্য মক্কায় (মিনায়) নহরকৃত উটগুলো সাহাবীগণের পক্ষ থেকেও হতে পারে।

আলোচনা:

ইবনু আববাস (রা.) এর হাদীসটি নাসাঈ, তিরমিযী ও ইবনু মাজাহতে, জাবির (রা.) বর্ণিত হাদীসটি সহীহ মুসলিম ও আবুদাউদে এবং আনাস (রা.) বর্ণিত হাদীসটি সহীহ বুখারীতে সংকলিত হয়েছে। সহীহ মুসলিম ও সহীহ বুখারীতে যথাক্রমে ‘হজ্জ’ও ‘মানসিক’ অধ্যায়ে এবং সুনানে ‘কুরবানী’ অধ্যায়ে হাদীসগুলো এসেছে।
যেমন-(১) তিরমিযী ‘কুরবানীতে শরীক হওয়া’ অধ্যায়ে ইবনু আববাস, জাবির ও আলী (রা.) থেকে মোট তিনটি হাদী এনেছেন।
(২) ইবনু মাজাহ উক্ত মর্মের শিরোনামে ইবনু আববাস,জাবির, আবূ হুরায়রা ও আয়েশা (রা.) হতে যে পাঁচটি হাদীস (৩১৩১-৩৪ নং) এনেছেন, তার সবগুলোই সফরে কুরবানী সংক্রান্ত।
(৩) নাসাঈ কেবলমাত্র ইবনু আববাস ও জাবির (রা.) থেকে পূর্বের দু‘টি হাদীস (২৩৯৭-৯৮ নং) এনেছেন।
(৪) আবু দাউদ শুধুমাত্র জাবির (রা.) এর পূর্ববর্ণিত সফরে কুরবানীর হাদীসটি এনেছেন। তিনটি সহীহ সনদে (২৮০৭-৯ নং), যার মধ্যে ২৮০৮ নং হাদীরটিতে কোন ব্যাখ্যা নেই।

বিভ্রাটের কারণ:
মিশকাত শরীফে ইবনু আববাস (রা.) এর সফরের হাদীসটি (১৪৬৯ নং) এবং জাবির (রা.) বর্ণিত ব্যাখ্যাশুন্য হাদীসটি (১৪৫৮ নং ) সংকলিত হয়েছে। সম্ভবত জাবির (রা.) বর্ণিত ‘মুত্বলাক্ব’ বা ব্যাখ্যাশুন্য হাদীসটিকে ভিত্তি করেই মুক্বীম অবস্থায় গরু বা মহিষে সাতভাগা কুরবানীর নিয়ম চালু হয়েছে। অথচ, ভাগের বিষয়টি সফরের সঙ্গে সম্পৃক্ত, যা ইবনু আববাস ও জাবির (রা.) বর্ণিত বিস্তারিত হাদীসে উল্লেখিত হয়েছে।
(মিশকাত, হা/১৪৬৯; মুসলিম , হা/১৩১৮; বুখারী, ১/২৩১)

আর একই রাবীর বর্ণিত সংক্ষিপ্ত হাদীসের স্থলে বিস্তারিত ও ব্যাখ্যা সম্বলিত হাদীস দলীলের ক্ষেত্রে গ্রহণ করাই মুহাদ্দিসগণের সর্ববাদীসম্মত রীতি।

তাছাড়া, মুক্বীম অবস্থায় মদীনায় রাসূল (সা.) বা সাহাবায়ে কেরাম কখনো ভাগে কুরবানী করেছেন বলেও জানা যায় না। ইমাম মালিক (রাহ.) কুরবানীতে শরীক হওয়ার বিষয়টিকে মাকরূহ মনে করতেন।
(মুওয়াত্বা মালেক, পৃ. ২৯৯)।

উভয় পক্ষের প্রদানকৃত দলীল সমূহের পর্যালোচনা:
মুক্বীম অবস্থায় সাতটি পরিবারের সকল সদস্যের পক্ষ থেতে সাতটি ভাগ দিয়ে একটি উট বা গরু বা মহিষ ক্রয় করে করে কুরবানী করার ব্যাপারে উপরে উল্লেখিত উভয় পক্ষের উপস্থাপিত প্রমাণিত প্রমাণাদিকে বিশ্লেষণমূলক পর্যলোচনা করলে যে বিষয়টি আমাদের কাছে সুস্পষ্ট হয়, তা হচ্ছে, জাবির (রা.) বর্ণিত আবু দাউদদের ব্যাখ্যা শূন্য হাদীসটির কারণেই মুসাফির ও মুক্বীম অবস্থায় কুরবানীতে ভাগাভাগি নিয়ে সংশয়ের সৃষ্টি হয়েছে।

প্রথমত:
এ হাদীসটিতে কেবল বলা হচ্ছে, ‘গরুতে সাতজন আর উটে সাতজন’। এখানে সফর না মুক্বীম তা বলা হয়নি। কিন্তু এটি যে সফরের হাদীস তা জাবির (রা.) বর্ণিত অন্যান্য হাদীসগুলো দ্বারা প্রমাণিত।
দ্বিতীয়ত: জাবির (রা.) বর্ণিত সফরের হাদীসগুলো ইমাম আবূ দাউদ যে অধ্যায়ে বর্ণনা করেছেন এ ব্যাখ্যাশূন্য হাদীসটিও সে অধ্যায়ে বর্ণনা করেছেন।
সর্বোপরি, উভয় পক্ষের মতের স্বপক্ষে উপস্থাপিত দলীলাদি পর্যালোচনা করলে আমাদের সামনে তিনটি বিষয় সুস্পষ্টভাবে প্রতীয়মান হয়, তা হলে:
1. সফর ও মুক্বীম অবস্থায় একটি পরিবারের পক্ষ থেকে একটি পশু কুরবানী করার ব্যাপারে উভয় পক্ষই একমত।
2. ভাগে কুরবানী জায়েয।
3. সফর ও মুক্বীম অবস্থায় সাত ব্যক্তির পক্ষ থেকে ভাগে একটি পশু কুরবানী করা যায়।

একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে কিছু কথা না বললেই নয়, তা হলো- হাদীসে বলা হয়েছে, ‘‘সাতজনের পক্ষ থেকে’ (মুসলিম, মিশকাত, হা/১৪৫৮), কিন্তু আমাদের সমাজে কুরবানী করা হচ্ছে সাত পরিবারের পক্ষ থেকে।
বলা যায়, সফর অবস্থাতেও সাত পরিবারের পক্ষ থেকে অনুমতি নেই।

আরো স্পষ্ট হলো, সাত জনের প্রেক্ষাপট কেবল সফর অবস্থায় সৃষ্টি হয়। মুক্বীম অবস্থায় কুরবানী পরিবারের সাথে সম্পৃক্ত, যেমন- রাসূল (সা.) করতেন। মূলত, এক্ষেত্রে সফরের হাদীসগুলোকে আম হিসেবে ধরা যাচ্ছে না। কারণ, এ হাদীসগুলো রাসূলুল্লাহ (সা.) ও তার সাহাবীগণ (রা.) মুক্বীম অবস্থায় যে ভাগা কুরবানী করতেন, সে সম্পর্কে নির্দিষ্ট কোন হাদীস নেই। রাসূল (সা.) প্রতি বছর দু‘টি করে খাসি কুরবানী করতেন।

(মুত্তাফাক্ব আলাইহ, মিশকাত, হা/১৪৫৩)

অথচ, দুঃখের বিষয় বর্তমানে কেবল সাত ব্যক্তির পক্ষ থেকে নয়; বরং মুক্বীম অবস্থায় সাত পরিবারের বর্তমানে কেবল সাত ব্যক্তির পক্ষ থেকে নয়; বরং মুক্বীম অবস্থায় সাত পরিবারের ৭-এর অধিক ব্যক্তির পক্ষ থেকে একটি গরু কুরবানী দেওয়া হচ্ছে।

আজকাল পরিবারের পক্ষ থেকে একটি ছাগল কুরবানীর সাথে একটি গরুর ভাগা নেওয়া হচ্ছে মূলত গোশত বেশী পাবার স্বার্থে। ‘নিয়ত’ যখন গোশত খাওয়া, তখন কুরবানীর উদ্দেশ্য কিভাবে হাছিল হবে? কুরবানী হলো পিতা ইবরাহীমের সুন্নাত, যা তিনি পুত্র ইসমাঈলের জীবনের বিনিময়ে করেছিলেন।
আর তা ছিল আল্লাহর পক্ষ হতে পাঠানো একটি পশুর জীবন অর্থাৎ দুম্বা। অতএব ইবরাহীম ও মুহাম্মাদী সুন্নাতের অনুসরণে নিজের ও নিজ পরিবারের পক্ষ হতে আল্লাহর রাহে একটি জীবন তথা একটি পূর্ণাঙ্গ পশু কুরবানী দেওয়া উচিত, পশুর দেহের কোন খন্ডিত অংশ নয়।

পরিশেষে, মনে রাখতে হবে কুরবানী হলো একটি গুরুত্বপূর্ণ ইবাদাত ও আল্লাহ রাববুল ‘আলামিনের নৈকট্য লাভের উপায়। তাই তা আদায় করতে হবে সময়, সংখ্যা ও পদ্ধতিগত দিক দিয়ে শরীয়ত অনুমোদিত নিয়মাবলি অনুসরণ বা শুধু সদকা (দান) নয়।। কুরবানীর উদ্দেশ্য শুধু গোশত খাওয়া নয়, শুধু মানুষের উপকার করা নয় বা শুধু সদকা (দান) নয়। কুরবানীর উদ্দেশ্য হলো আল্লাহ রাববুল ‘আলামীনের একটি মহান নিদর্শন তার রাসূলের নির্দেশিত পদ্ধতিতে আদায় করা।

---কুরবানীর ইতিহাস, উদ্দেশ্য ও কতিপয় বিধান

লেখক- ড. মোঃ আবদুল কাদের

Monday, October 1, 2012

জুম’আর আদব


লেখকঃ অধ্যাপক মুহাম্মদ নুরুল ইসলাম

। জুম’আর দিন গোসল করা। যাদের উপর জুম’আ ফরজ তাদের জন্য এ দিনে গোসল করাকে রাসুল (সাঃ) ওয়াজিব করেছেন(বুখারীঃ ৮৭৭, ৮৭৮, ৮৮০, ৮৯৭, ৮৯৮)। পরিচ্ছন্নতার অংশ হিসাবে সেদিন নখ ও চুল কাটা একটি ভাল কাজ।
। জুম’আর সালাতের জন্য সুগন্ধি ব্যবহার করা। (বুখারীঃ ৮৮০)
। মিস্ওয়াক করা। (ইবনে মাজাহঃ ১০৯৮, বুখারীঃ৮৮৭, ইঃফাঃ৮৪৩)
। গায়ে তেল ব্যবহার করা। (বুখারীঃ৮৮৩)
। উত্তম পোশাক পরিধান করে জুম’আ আদায় করা। (ইবনে মাজাহঃ১০৯৭)
। মুসুল্লীদের ইমামের দিকে মুখ করে বসা। (তিরমিযীঃ৫০৯, ইবনে মাজাহঃ১১৩৬)
। মনোযোগ সহ খুৎবা শোনা ও চুপ থাকা- এটা ওয়াজিব। (বুখারীঃ ৯৩৪, মুসলিমঃ৮৫৭, আবু দাউদঃ১১১৩, আহমাদঃ১/২৩০)
। আগে ভাগে মসজিদে যাওয়া। (বুখারীঃ৮৮১, মুসলিমঃ৮৫০)
। পায়ে হেঁটে মসজিদে গমন। (আবু দাউদঃ ৩৪৫)
১০। জুম’আর দিন ফজরের নামাজে ১ম রাক’আতে সূরা সাজদা (সূরা নং-৩২) আর ২য় রাকা’আতে সূরা ইনসান(দাহর)(সূরা নং-৭৬) পড়া। (বুখারীঃ৮৯১, মুসলিমঃ৮৭৯)
১১। সূরা জুম’আ ও সূরা মুনাফিকুন দিয়ে জুম’আর সালাত আদায় করা। অথবা সূরা আলা ও সূরা গাশিয়া দিয়ে জুম’আ আদায় করা। (মুসলিমঃ৮৭৭, ৮৭৮)
১২। জুম’আর দিন ও জুম’আর রাতে বেশী বেশী দুরুদ পাঠ। (আবু দাউদঃ ১০৪৭)
১৩। এ দিন বেশী বেশী দোয়া করা।। (বুখারীঃ ৯৩৫)
১৪। মুসুল্লীদের ফাঁক করে মসজিদে সামনের দিকে এগিয়ে না যাওয়া। (বুখারীঃ৯১০, ৮৮৩)
১৫। মুসুল্লীদের ঘাড় ডিঙ্গিয়ে সামনের কাতারে আগানোর চেষ্টা না করা। (আবু দাউদঃ ৩৪৩, ৩৪৭)
১৬। কাউকে উঠিয়ে দিয়ে সেখানে বসার চেষ্টা না করা। (বুখারীঃ৯১১, মুসলিমঃ২১৭৭, ২১৭৮)
১৭। খুৎবা চলাকালীন সময়ে মসজিদে প্রবেশ করলে তখনও দু’রাকা’আত ‘তাহিয়্যাতুল মাসজিদ’ সালাত আদায় করা ছাড়া না বসা। (বুখারীঃ ৯৩০)
১৮। জুম’আর দিন জুম’আর পূর্বে মসজিদে জিকর বা কোন শিক্ষামুলক হালকা না করা। অর্থাৎ ভাগ ভাগ হয়ে, গোল গোল হয়ে না বসা, যদিও এটা কোন শিক্ষামূলক অনুষ্ঠান হোক না কেন। (আবু দাউদঃ ১০৮৯)
১৯। কেউ কথা বললে ‘চুপ করুন’ এটুকুও না বলা। (নাসায়ীঃ ৭১৪, বুখারীঃ ৯৩৪)
২০। মসজিদে যাওয়ার আগে কাঁচা পেয়াজ, রসুন না খাওয়া ও ধুমপান না করা। (বুখারীঃ ৮৫৩)
২১। ঘুমের ভাব বা তন্দ্রাচ্ছন্ন হলে বসার জায়গা বদল করে বসা। (আবু দাউদঃ ১১১৯)
২২। ইমামের খুৎবা দেওয়া অবস্থায় দুই হাঁটু উঠিয়ে না বসা। (আবু দাউদঃ ১১১০, ইবনে মাজাহঃ ১১৩৪)
২৩। খুৎবার সময় ইমামের কাছাকাছি বসা। জান্নাতে প্রবেশের উপযুক্ত হলেও ইমাম থেকে দূরে উপবেশনকারীরা বিলম্বে জান্নাতে প্রবেশ করবে। (আবু দাউদঃ ১১০৮)
২৪। জুম’আর দিন সূরা কাহফ পড়া। এতে পাঠকের জন্য আল্লাহ তায়ালা দুই জুম’আর মধ্যবর্তী সময়কে আলোকিত করে দেন। (হাকেমঃ ২/৩৬৮, বায়হাকীঃ ৩/২৪৯)
২৫। জুম’আর আযান দেওয়া। অর্থাৎ ইমাম মিম্বরে বসার পর যে আযান দেওয়া হয় তা।(বুখারীঃ ৯১২)
২৬।জুম’আর ফরজ নামাজ আদায়ের পর মসজিদে ৪ রাকা’আত সুন্নাত সালাত আদায় করা। (বুখারীঃ ১৮২, মুসলিমঃ ৮৮১, আবু দাউদঃ ১১৩০)
২৭। উযর ছাড়া একই গ্রাম ও মহল্লায় একাধিক জুম’আ চালু না করা। আর উযর হল এলাকাটি খুব বড় হওয়া, বা প্রচুর জনবসতি থাকা, বা মসজিদ দূরে হওয়া, বা মসজিদে জায়গা না পাওয়া, বা কোন ফিতনা ফাসাদের ভয় থাকা। (মুগনি লিবনি কুদামাঃ ৩/২১২, ফাতাওয়া ইবনে তাইমিয়্যাহঃ ২৪/২০৮)
২৮। ওজু ভেঙ্গে গেলে মসজিদ থেকে বের হয়ে যাওয়া। অতঃপর আবার ওজু করে মসজিদে প্রবেশ করা। (আবু দাউদঃ ১১১৪)
২৯। একান্ত উযর না থাকলে দুই পিলারে মধ্যবর্তী ফাঁকা জায়গায় সালাত আদায় না করা। (হাকেমঃ ১/১২৮)
৩০। সালাতের জন্য কোন একটা জায়গাকে নির্দিষ্ট করে না রাখা, যেখানে যখন জায়গা পাওয়া যায় সেখানেই সালাত আদায় করা (আবু দাউদঃ৮৬২)। অর্থাৎ আগে থেকেই নামাজের বিছানা বিছিয়ে জায়গা দখল করে না রাখা বরং যে আগে আসবে সেই আগে বসবে।
৩১। কোন নামাজীর সামনে দিয়ে না হাঁটা অর্থাৎ মুসুল্লী ও সুতরার মধ্যবর্তী জায়গা দিয়ে না হাঁটা। (বুখারীঃ৫১০)
৩২। এতটুকু জোরে আওয়াজ করে কোন কিছু না পড়া, যাতে অন্যের সালাত ক্ষতিগ্রস্ত হয় বা মনোযোগে বিঘ্ন ঘটে। (আবু দাউদঃ ১৩৩২)
৩৩। পায়ে হেঁটে মসজিদে যাওয়ার ফযীলত অন্তরে জাগরূক রাখা।
৩৪। হাঁটার আদব মেনে মসজিদে গমন করা।
৩৫। খুৎবার সময় খতীবের কোন কথার সাড়া দেওয়া বা তার প্রশ্নের জবাব দানে শরীক হওয়া জায়েজ। (বুখারীঃ ১০২৯, মুসলিমঃ ৮৯৭)
৩৬। হানাফী আলেমগন বলেছেন যে, ভিড় প্রচণ্ড হলে সামনের মুসুল্লীর পিঠের উপর সিজদা দেওয়া জায়েজ (আহমাদঃ১/৩২)। দরকার হলে পায়ের উপর ও দিতে পারে (আর রাউদুল মুরবী)
৩৭। যেখানে জুম’আর ফরজ আদায় করেছে, উত্তম হল ঐ একই স্থানে সুন্নাত না পড়া। অথবা কোন কথা না বলে এখান থেকে গিয়ে পরবর্তী সুন্নাত সালাত আদায় করা। (মুসলিমঃ ৭১০, বুখারীঃ ৮৪৮)
৩৮। ইমাম সাহেব মিম্বরে এসে হাজির হওয়ার পূর্ব পর্যন্ত তাসবীহ-তাহলীল, তাওবা- ইস্তিগফার ও কুরআন তিলাওয়াতে রত থাকা।

সূত্রঃ বই-প্রশ্নোত্তরে জুমু’আ ও খুৎবা
পরিমার্জনেঃ ডঃ মোহাম্মদ মনজুরে ইলাহী, 
ডঃ আবু বকর মুহাম্মদ জাকারিয়া মজুমদার,
ডঃ মুহাম্মদ সাইফুল্লাহ।