Saturday, September 8, 2012

আল্লাহর জন্য ভালোবাসার ফল

* আবু হুরাইরা রা. থেকে বর্ণিত যে, রাসূলুল্লা সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন: আল্লাহ তাআলা কেয়ামতের দিন বলবেন, যারা পরস্পরকে ভালোবেসেছে আমারই জন্য তারা আজ কোথায়? আজ আমি তাদেরকে আমার ছায়ায় ছায়া দান করবো। আজ এমন দিন আমার ছায়া ব্যতীত আর কোন ছায়া নেই। (বর্ণনায় : মুসলিম ১৯৮৮)

ক্ষমা

* আবু হুরায়রা রাঃ বলেন, রাসুলুল্লাহ সাঃ ইরশাদ করেন: যে ব্যক্তি দৈনিক একশত বার سبحان الله وبحمده সুবহানাল্লাহি ওয়াবিহামদিহি (আল্লাহ পূত ও পবিত্র এবং তাঁরই জন্য সকল প্রশংসা) পাঠ করে তার পাপসমূহ মুছে ফেলা হয়, যদিও তা সাগরের ফেনারাশির সমান হয়ে থাকে। [বুখারী খন্ড ৭৫ হাদিস ৪১৪]

দোয়া

* আল্লাহ তা'য়ালা বলেন -
"বল তো কে নিঃসহায়ের ডাকে সাড়া দেন যখন সে ডাকে এবং কষ্ট দূরীভূত করেন এবং তোমাদেরকে পৃথিবীতে পুর্ববর্তীদের স্থলাভিষিক্ত করেন। সুতরাং আল্লাহর সাথে অন্য কোন উপাস্য আছে কি? তোমরা অতি সামান্যই ধ্যান কর।" [ সূরা নমল -৬২]


* " হে আমার পালনকর্তা, আমার জ্ঞান বৃদ্ধি করুন।"  [সূরা ত্বোয়া-হা -১১৪]
 
* "যে ব্যক্তি আল্লাহর উপর ভরসা করে তার জন্যে তিনিই যথেষ্ট।" [সূরা আত্ব-ত্বালাক্ব -০৩] 

* "হে আমাদের পালনকর্তা, আমাকে, আমার পিতা-মাতাকে এবং সব মুমিনকে ক্ষমা করুন, যেদিন হিসাব কায়েম হবে।"
[সূরা ইব্রাহীম -৪১]


* "হে আমার পালনকর্তা, ক্ষমা করুন ও রহম করুন। রহমকারীদের মধ্যে আপনি শ্রেষ্ঠ রহমকারী।"
[সূরা আল মু’মিনূন -১১৮]


* যে গোনাহ, করে কিংবা নিজের অনিষ্ট করে, অতঃপর আল্লাহর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করে, সে আল্লাহকে ক্ষমাশীল, করুণাময় পায়। [সূরা আন নিসা-১১০]

* "হে আমাদের পালনকর্তা, আমাদের নূরকে পূর্ণ করে দিন এবং আমাদেরকে ক্ষমা করুন। নিশ্চয় আপনি সবকিছুর উপর সর্ব শক্তিমান।"   [ সূরা আত-তাহরীম -০৮]

* "হে আমার পালনকর্তা, আমাকে প্রজ্ঞা দান কর এবং আমাকে সৎকর্মশীলদের অন্তর্ভুক্ত কর এবং আমাকে পরবর্তীদের মধ্যে সত্যভাষী কর। এবং আমাকে নেয়ামত উদ্যানের অধিকারীদের অন্তর্ভূক্ত কর।" [সূরা আশ-শো’আরা -৮৩-৮৫]
  
* "হে আমার পালনকর্তা, তুমি আমাকে সামর্থ দাও যাতে আমি তোমার সেই নিয়ামতের কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করতে পারি, যা তুমি আমাকে ও আমার পিতা-মাতাকে দান করেছ এবং যাতে আমি তোমার পছন্দনীয় সৎকর্ম করতে পারি এবং আমাকে নিজ অনুগ্রহে তোমার সৎকর্মপরায়ন বান্দাদের অন্তর্ভুক্ত কর।" [সূরা নমল -১৯]
  
* 'হে আল্লাহ! আমি আশ্রয় প্রার্থনা করছি বিপদের কষ্ট, নিয়তির অমঙ্গল, দুর্ভাগ্যের স্পর্শ ও বিপদে শক্রর উপহাস হতে।।'
[বোখারি : ৫৮৭১]

* ভবিষ্যতের দুশ্চিন্তা থেকে পরিত্রাণ পাওয়ার অন্যতম কার্যকর উপায় হল প্রিয় নবী (সা) এর নিম্নোক্ত দোয়াটি পাঠ করা। রাসূল (সা) ভবিষ্যতের দুশ্চিন্তা থেকে এই দোয়াটির মাধ্যমে আল্লাহ্‌ তা’আলার কাছে সাহায্য চাইতেন ,
“আল্লাহুম্মা আস্‌লিহ্‌লী দ্
বীনী আল্লাজি হুয়া ‘ইস্‌মাতু আমরি, ওয়া আস্‌লিহ্‌লী দুনিয়াআ আল্লাতি ফীহা মা’আশি, ওয়া আস্‌লিহ্‌লী আখিরাতি আল্লাতি ইলাইহা মা’আদি, ওয়াজ’আল আল হায়াতা জিয়াদাতাল্লি ফী কুল্লি খাইর, ওয়াল মাউতা রাহাতাল্লি মিন কুল্লী শার্‌রি।”
অর্থঃ হে আল্লাহ্‌! তুমি আমার দ্বীনকে সংশোধন করে দাও যা আমার জীবনের ভিত্তি এবং আমার পার্থিব কাজকর্মকেও সংশোধন করে দাও যার মধ্যে রয়েছে আমার জীবিকা এবং আমাকে দাও সর্বোত্তম সমৃদ্ধি আখিরাতে যেখানে আমার প্রত্যাবর্তন। আমার জীবনকে পুণ্য অর্জনের মাধ্যম বানিয়ে দাও এবং আমার মৃত্যুকে কর সমস্ত মন্দ থেকে বেঁচে যাওয়ার অবকাশ। [সহীহ্‌ মুসলিম; হাদিস নং-২৭২০]

* 'হে আল্লাহ ! আমি যে সব গুনাহ অতীতে করেছি এবং যা পরে করেছি উহার সমস্তই তুমি মাফ করে দাও , মাফ করো সেই গুনাহগুলিও যা আমি গোপনে করেছি আর যা প্রকাশ্যে করেছি, মাফ করো আমার সীমালঙ্ঘন জনিত গুনাহসমূহ এবং সেই সব গুনাহ যে গুনাহ সম্বন্ধে তুমি আমা অপেক্ষা অধিক জ্ঞাত, তুমি যা চাও আগে করো এবং তুমি যা চাও পিছে করো । আর তুমি ছাড়া ইবাদতের যোগ্য কোন মাবুদ নেই ।' [মুসলিম-১/৫৩৪] 

* "হে আল্লাহ, আমি একজন মানুষ মাত্র।  তাই মুসলিমদের যাকেই আমি গালি দিয়েছি বা অভিশাপ করেছি বা চাবুক মেরেছি তার জন্যে তা পবিত্রতা ও রহমত বানিয়ে দাও"  (মুসলিম ২৬০১)

* আমরা এবং সমগ্র জগত আল্লাহর জন্য সকালে উপনীত হয়েছি , আর সমুদয় প্রসংশা আল্লাহর জন্য , আল্লাহ ছাড়া কোনও মাবুদ নেই, তিনি এক তাঁর কোনও শরীক নেই , রাজত্ব তাঁরই এবং প্রশংসা মাত্র তাঁর । তিনি সকল কিছুর উপর ক্ষমতাবান । প্রভু হে ! এই দিনের মাঝে এবং উহার পরে যা কিছু মঙ্গল নিহিত আছে আমি তোমার নিকট উহার প্রার্থনা করছি। আর ওই দিনের মাঝে এবং উহার পরে যা কিছু অমঙ্গল আছে উহা হইতে তোমার নিকট আশ্রয় চাই । প্রভু ! আলস্য এবং বার্ধক্যের কষ্ট হতে আমি তোমার আশ্রয় প্রার্থনা করি , প্রভু দোযখের আজাব হতে এবং কবরের আজাব হতে তোমার আশ্রয় কামনা করি ।[ মুসলিম -৪/২০৮৮]
 

Wednesday, September 5, 2012

হাদীসের রত্ন ভান্ডার থেকে একগুচ্ছে মনি-মুক্তা

১. اتَّقِ اللَّه حَيْثُمَا كُنْتَ وَأَتْبِعْ السَّيِّئَةَ الْحَسَنَةَ تَمْحُهَا وخَالِقِ النَّاسَ بِخُلُقٍ حَسَنٍ
“আল্লাহকে ভয় কর যেখানেই থাকনা কেন। অন্যায় কাজ হয়ে গেলে পরক্ষণেই ভাল কাজ কর। তবে ভাল কাজ অন্যায়কে মুছে দিবে আর মানুষের সাথে ভাল ব্যবহার কর।“ (তিরমিযী-সহীহ)
২. ((إِنَّمَا الْأَعْمَالُ بِالنِّيَّاتِ))
“সব কাজই নিয়তের উপর নির্ভরশীল।“(সহীহ বুখারী)
৩. ((الْمُسْلِمُ مَنْ سَلِمَ الْمُسْلِمُونَ مِنْ لِسَانِهِ وَيَدِهِ))
“প্রকৃত মুসলিম সে ব্যক্তি যার মুখের ভাষা এবং হাত থেকে অন্য মুসলমানগণ নিরাপদ থাকে।“ (সহীহ বুখারী)
৪. (( مَنْ غَشّنا فَلَيْسَ مِنِّا ))
যে আমাদের সাথে প্রতারণা করে সে আমাদের দলভূক্ত নয়। (মুসলিম)
৫. ((مَنْ كَانَ يُؤْمِنُ بِاللَّهِ وَالْيَوْمِ الْآخِرِ فَلَا يُؤْذِ جَارَهُ))
“যে আল্লাহ এবং আখেরাতের উপর বিশ্বাস রাখে সে যেন তার প্রতিবেশীকে কষ্ট না দেয়।“ (বুখারী)
৬ (( مَنْ كَانَ يُؤْمِنُ بِاللَّهِ وَالْيَوْمِ الْآخِرِ فَلْيُكْرِمْ ضَيْفَهُ ))
“যে আল্লাহ এবং আখেরাতের উপর বিশ্বাস রাখে সে যেন তার মেহমানকে সম্মান করে।“ (বুখারী)
৭.مَنْ كَانَ يُؤْمِنُ بِاللَّهِ وَالْيَوْمِ الْآخِرِ فَلْيَقُلْ خَيْرًا أَوْ لِيَصْمُتْ
“যে আল্লাহ এবং আখেরাতের উপর বিশ্বাস রাখে সে যেন ভাল কথা বলে নতুবা চুপ থাকে।“ (বুখারী)
৮.(( مِنْ حُسْنِ إِسْلَامِ الْمَرْءِ تَرْكُهُ مَا لَا يَعْنِيهِ))
“একজন মানুষের একটি সুন্দর ইসলামী বৈশিষ্ট হল সে অযথা কাজ পরিত্যাগ করে।“ (মুওয়াত্তা মালেক)
৯. مَنْ كَانَ فِي حَاجَةِ أَخِيهِ كَانَ اللَّهُ فِي حَاجَتِهِ
“যে তার কোন ভাইয়ের প্রয়োজন পূরণ করবে আল্লাহ তার প্রয়োজন পূরণ করবেন।“ (বুখারী)
১০. ((مَنْ فَرَّجَ عَنْ مُسْلِمٍ كُرْبَةً فَرَّجَ اللَّهُ عَنْهُ كُرْبَةً مِنْ كُرُبَاتِ يَوْمِ الْقِيَامَةِ))
“যে ব্যক্তি কোন মুসলমানের একটি কষ্ট দূর করবে আল্লাহ তাআলা কিয়ামতের দিন তাকে অনেক বিপদের মধ্য থেকে একটি বিপদ থেকে উদ্ধার করবেন।“ (বুখারী)
.
১১. ((مَنْ سَتَرَ مُسْلِمًا سَتَرَهُ اللَّهُ يَوْمَ الْقِيَامَةِ))
“যে ব্যক্তি কোন মুসলমানের দোষ-ত্রুটি গোপন করবে কিয়ামতের দিন আল্লাহ তার দোষ-ত্রুটি ঢেকে রাখবেন।“ (বুখারী)
১২. ((عَلَيْكُمْ بِالصِّدْقِ فَإِنَّ الصِّدْقَ يَهْدِي إِلَى الْبِرِّ وَالْبِرَّ يَهْدِي إِلَى الْجَنَّةِ))
“সব সময় সত্যকে আঁকড়ে ধরে থাক। কারণ সত্য কথা ভাল কাজের পথ দেখায়। আর ভাল কাজ জান্নাতের পথ দেখায়।“ (মুসলিম).
১৩. إِيَّاكُمْ وَالْكَذِبَ فَإِنَّ الْكَذِبَ يَهْدِي إِلَى الْفُجُورِ وَالْفُجُورَ يَهْدِي إِلَى النَّارِ
“মিথ্যা থেকে দূরে থাক। কারণ মিথ্যা অন্যায় কাজের পথ দেখায় আর অন্যায় কাজ জাহান্নামের পথ দেখায়।“ (মুসলিম)
১৪. الدَّالُّ عَلَى الْخَيْرِ كَفَاعِلِهِ
“যে ব্যক্তি ভাল কাজের রাস্তা দেখায় সে ঐ ব্যক্তির মতই সাওয়াব পায় যে উক্ত ভাল কাজ সম্পাদন করে।” (তিরমিযী-সহীহ)
১৫. اتَّقِ دَعْوَةَ الْمَظْلُومِ فَإِنَّهَا لَيْسَ بَيْنَهَا وَبَيْنَ اللَّهِ حِجَابٌ
“মজলুমের বদ দুআকে ভয় কর। কারণ, তার বদ দুআ আর আল্লাহর মাঝে কোন পর্দা নেই।“ (বুখারী)
১৬. اتَّقُوا الظُّلْمَ فَإِنَّ الظُّلْمَ ظُلُمَاتٌ يَوْمَ الْقِيَامَةِ
“তোমরা জুলুম থেকে দূরে থাক। কারণ জুলুম কিয়ামতের দিন ঘোর অন্ধকার হিসেবে উপস্থিত হবে।“ (মুসলিম)
১৭. لَيْسَ الشَّدِيدُ بِالصُّرَعَةِ إِنَّمَا الشَّدِيدُ الَّذِي يَمْلِكُ نَفْسَهُ عِنْدَ الْغَضَبِ
“কুস্তি লড়াইয়ের মাধ্যমে প্রকৃত বীরত্বের পরিচয় পাওয়া যায় না। বরং প্রকৃত বীর তো সেই ব্যক্তি যে রাগের সময় নিজেকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারে।“ (বুখারী)
১৮. لَا يَحِلُّ لِمُسْلِمٍ أَنْ يَهْجُرَ أَخَاهُ فَوْقَ ثَلَاثِ لَيَالٍ
“এক মুসলমানের জন্য অপর মুসলমান ভাইয়ের সাথে তিন দিনের বেশি সম্পর্ক ছিন্ন করে রাখা বৈধ নয়।“ (বুখারী)
১৯. مَا نَقَصَتْ صَدَقَةٌ مِنْ مَالٍ
“দান করলে সম্পদ কমে না।“ (মুসলিম)
২০. ((مَا زَادَ اللَّهُ عَبْدًا بِعَفْوٍ إِلَّا عِزًّا))
“ক্ষমা করলে আল্লাহ বান্দার সম্মান বাড়িয়ে দেন।“ (মুসলিম)
২১. ((مَا تَوَاضَعَ أَحَدٌ لِلَّهِ إِلَّا رَفَعَهُ اللَّهُ))
“আল্লাহর উদ্দেশ্যে কেউ বিনয়ী হলে আল্লাহ তার মর্যাদা বাড়িয়ে দেন।“ (মুসলিম)
২২. ((لَيْسَ مِنَّا مَنْ لَمْ يَرْحَمْ صَغِيرَنَا وَيُوَقِّرْ كَبِيرَنَا))
“যে ছোটদেরকে দয়া এবং বড়দেরকে শ্রদ্ধা করেনা সে আমাদের দলভূক্ত নয়।“ (তিরমিযী)
২৩. ((الْغِنَى غِنَى النَّفْسِ))
“অন্তরের সচ্ছলাতাই প্রকৃত সচ্ছলাতা।“(বুখারী) (অর্থাৎ যে ব্যক্তি মনের দিক দিয়ে ধনী সেই আসল ধনী, শুধু অর্থ-সম্পদ বেশি থাকলেই ধনী হওয়া যায় না।)
২৪. “হে লোক সকল! তোমরা সালামের প্রসার ঘটাও, মানুষকে খাবার খাওয়াও আর মানুষ যখন ঘুমিয়ে থাকে তখন সালাত আদায় কর তবে শান্তিতে জান্নাতে প্রবেশ করবে।“ (তিরমিযী)
২৫. لَا تَأْكُلُوا بِالشِّمَالِ فَإِنَّ الشَّيْطَانَ يَأْكُلُ بِالشِّمَالِ
“বাম হাতে খেওনা। কারণ শয়তান বাম হাতে খায়।“ (মুসলিম)
২৬. لَا تَسُبُّوا الْأَمْوَاتَ
“তোমরা মৃতদেরকে গালি দিও না।“ (বুখারী)
২৭. لَا يُؤْمِنُ أَحَدُكُمْ حَتَّى يُحِبَّ لِأَخِيهِ مَا يُحِبُّ لِنَفْسِهِ
“তোমাদের কেউ প্রকৃত ঈমানদার হতে পারবে না যতক্ষণ না সে নিজের জন্য যা পছন্দ করে অন্য ভাইয়ের জন্যও তাই পছন্দ করবে।” (বুখারী)
২৮. قُلْ آمَنْتُ بِاللَّهِ ثُمَّ اسْتَقِمْ
“বল, আল্লাহর উপর ঈমান আনলাম। অতঃপর তার উপর অবিচল থাক।“ (মুসলিম)
২৯. الْبِرُّ حُسْنُ الْخُلُقِ وَالْإِثْمُ مَا حَاكَ فِي صَدْرِكَ وَكَرِهْتَ أَنْ يَطَّلِعَ عَلَيْهِ النَّاسُ
“মানুষের সাথে সুন্দর আচরণ করা হল নেকীর কাজ। আর ঐ কাজটাই পাপ যা তোমার মনে খটকা লাগে হয় এবং মানুষ সেটা জেনে ফেলাকে অপছন্দ কর।“ (মুসলিম)
৩০. إِنَّ مِنْ خِيَارِكُمْ أَحْسَنَكُمْ أَخْلَاقًا
“নিশ্চয় তোমাদের মধ্যে সে ব্যক্তিই উত্তম যার চরিত্র সবচেয়ে মাধুর্যপূর্ণ।“ (বুখারী)
৩১.مَنْ رَأَى مِنْكُمْ مُنْكَرًا فَلْيُغَيِّرْهُ بِيَدِهِ فَإِنْ لَمْ يَسْتَطِعْ فَبِلِسَانِهِ فَإِنْ لَمْ يَسْتَطِعْ فَبِقَلْبِهِ وَذَلِكَ أَضْعَفُ الْإِيمَانِ
“তোমাদের কেউ অন্যায় দেখলে তার কর্তব্য হল, (সাধ্য থাকলে) হাতের মাধ্যমে তা প্রতিহত করা, না পারলে মুখের ভাষা দ্বারা, তাও না পারলে অন্তর দ্বারা। আর এটাই হল দূর্বলতম ঈমানের পরিচয়।“ (মুসলিম)
৩২. خَيْرُكُمْ مَنْ تَعَلَّمَ الْقُرْآنَ وَعَلَّمَهُ
“তোমাদের মধ্যে সে ব্যক্তি শ্রেষ্ঠ যে নিজে কুরআন শিক্ষা করে এবং অন্যকে শিক্ষা দেয়।“ (বুখারী)
৩৩. ارْحَمُوا مَنْ فِي الْأَرْضِ يَرْحَمْكُمْ مَنْ فِي السَّمَاءِ
“তোমরা পৃথিবী অধিবাসীদের প্রতি দয়া কর যিনি আসমানে আছেন তিনি তোমাদের প্রতি দয়া করবেন।“ (তিরমিযী)
৩৫. لَا يَدْخُلُ الْجَنَّةَ نَمَّامٌ
“চুগলখোর জান্নাতে প্রবেশ করবে না।“ (মুসলিম)
৩৬. لْحَيَاءُ مِنْ الْإِيمَانِ
“লজ্জা ঈমানের অংশ।” (বুখারী)

Monday, September 3, 2012

মা

•রাসূল (সা:) বলেছেনঃ বেহেশ্ত হচ্ছে মায়েদের পায়ের নিচে।
কানযুল উম্মালঃ ৪৫৪৩৯, মুনতাখাবে মিযানুল হিকমাহঃ ৬১৪


• রাসূলে কারিম (সা) বলেছেনঃ নারীর প্রতি সবচেয়ে বেশি অধিকার হচ্ছে তার স্বামীর,আর পুরুষের উপর সবচেয়ে বেশি অধিকার হচ্ছে তার মায়ের।
কানযুল উম্মালঃ ৪৪৭৭১, মুনতাখাবে মিযানুল হিকমাহঃ ২৫৪

•রাসূলুল্লা( স:)বলেন, তিন রকম দোয়া নিসন্দেহে কবুল হয়। 
মজলুমের দোয়া, 
মুসাফিরের দোয়া 
আর সন্তানের জন্য পিতা-মাতার দোয়া।
তিরমিযী

হাজরে আসওয়াদের ফজীলত

অনেক হাদীসে হাজরে আসওয়াদের ফজীলত প্রমানিত হয়েছে, এবং তাওয়াফ কালে তাকে স্পর্শ ও চুমো দেওয়ায় উৎসাহ প্রদান করা হয়েছে। এর ফজীলতের দলিল হিসেবে নবীজির হাতের স্পর্শ এবং তাঁর পবিত্র মুখের চুম্বনই যথেষ্ট।

● উমর বিন
খাত্তাব (রাঃ) হাজরে আসওয়াদে চুম্বন দেন এবং বলেন-
“আমি জানি তুমি পাথর মাত্র, তোমার লাভ লোকসানের কোন ক্ষমতা নেই। আমি যদি নবীজিকে তমায় চুম্বন দিতে না দেখতাম তাহলে আমি তোমাকে চুম্বন দিতাম না।”(বুখারী ১৫৯৭, মুসলিম ১২৭০)

● ইবনে আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেনঃ রাসুলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেন-
“হাজরে আসওয়াদ যখন জান্নাত থেকে নেমে আসে তখন দুধের চেয়েও সাদা ছিল; কিন্তু আদম সন্তানের পাপ তাকে কালো করে দেয়।” (তিরমিজীঃ৮৭৭)

● ইবনে আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসুল (সাঃ) হাজরে আসওয়াদ সম্পর্কে বলেছেন-
“আল্লাহর কসম! তিনি কিয়ামতের দিন হাজরে আসওয়াদকে দুটি চোখ ও একটি জিহ্বা সম্পন্ন অবস্থায় হাজির করবেন। চোখ দুটি দ্বারা দর্শন ও জিহ্বা দ্বারা কথা বলবে এবং যে ব্যক্তি দুনিয়াতে ঈমানের সাথে তাকে চুম্বন দিয়েছে তার জন্য সাক্ষ্য দেবে।” (তিরমিজীঃ ৭৬১)

● আব্দুল্লাহ বিন আমর (রাঃ) নিজ কানে হাত রেখে তিনবার বলেন, আমি আল্লাহর কসম করে বলছি, আমি রাসুলুল্লাহ (সাঃ) কে বলতে শুনেছি- “হাজরে আসওয়াদ ও মাকামে ইব্রাহীম এ দুটি জান্নাতের জ্যোতিময় পাথর ছিল, আল্লাহ যদি এ দুটির জ্যোতি বিলুপ্ত না করতেন তাহলে আকাশ ও পৃথিবীর মধ্যে অথবা পশ্চিম ও পূর্ব দিগন্তে যা আছে সবই আলোকিত করে দিত।”(মুসনাদে আহমদ ২/২১৪)

● ‘ইব্রাহীম (আঃ) কা’বা নিরমানের কাজ শেষ করেন; কিন্তু একটি পাথর রাখার মতো জায়গা বাকী থেকে যায়। ইসমাঈল (আঃ) [ঐ খালি স্থানটি পূরণ করার জন্য] কোন একটি পাথর খুজতে আরম্ভ করেন। তখন ইব্রাহীম (আঃ) তাকে বলেন, আমি তোমাকে যেরকম পাথর আনতে বলেছি ঠিক সেই রকম নিয়ে এসো, তিনি পাথর খুঁজতে বেরিয়ে যান। যখন তিনি পাথর নিয়ে হাজির হন তখন দেখেন যে ইব্রাহীম (আঃ) ঐ স্থানে একটি পাথর বসিয়ে ফেলেছেন। অতঃপর তিনি বলেন, আব্বাজান এ পাথর কে নিয়ে এসেছে? প্রত্যুত্তরে বলেন, ঐ ব্যক্তি নিয়ে এশেচেহ যিনি তোমার নির্মাণ কাজের মুখাপেক্ষী নন। এটি জিব্রাঈল (আঃ) আকাশ থেকে নিয়ে এসেছেন।’*

*[এটি হাদীসের অংশ, মারফু হাদীসের পর্যায়ে যদিও সেটি আলী (রাঃ) পর্যন্ত মাওকুফ, দেখুন তাফসীর ইবনে কাসীর -১/২৫৮, তাফসীরে তাবারী, সূরা বাকারাহঃ ১২৭।]
উৎসঃ বই- পবিত্র মক্কার ইতিহাস, দারুসসালাম পাবলিকেশন্স

পর্দা (পুরুষ)

"মুমিনদেরকে বলুন, তারা যেন তাদের দৃষ্টি নত রাখে এবং তাদের যৌনাঙ্গর হেফাযত করে। এতে তাদের জন্য খুব পবিত্রতা আছে। নিশ্চয় তারা যা করে আল্লাহ তা অবহিত আছেন।"[সূরা আন-নূর -৩০]

(তাফহীমূল কুরান) একবার হঠাৎ নজর পড়ে গেলে ক্ষমাযোগ্য। কিন্তু প্রথম দৃষ্টিতে আকর্ষণীয় মনে হলে সেখানে আবার দৃষ্টিপাত করা ক্ষমারযোগ্য নয়। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এ ধরনের দেখাকে চোখের যিনা বলেছেন । তিনি বলেছেনঃ মানুষ তার সমগ্র ইন্দ্রিয়ের মাধ্যমে যিনা করে। দেখা হচ্ছে চোখের যিনা, ফুসলানো কন্ঠের যি
না, তৃপ্তির সাথে কথা শোনা কানের যিনা, হাত লাগানো ও অবৈধ উদ্দেশ্য নিয়া চলা হাত ও পায়ের যিনা । ব্যভিচারের এ যাবতীয় ভূমিকা যখন পুরোপুরি পালিত হয় তখন লজ্জাস্থানগুলো তাকে পূর্ণতা দান করে অথবা পূর্ণতা দান থেকে বিরত থাকে । (বুখারী, মুসলিম ও আবু দাউদ ) হযরত বুরাইদাহ বর্ণনা করেছেন, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম হযরত আলীকে (রা) বলেনঃ ----------''হে আলী! এক নজরের পর দ্বিতীয় নজর দিয়ো না । প্রথম নজর তো ক্ষমাপ্রাপ্ত কিন্তু দ্বিতীয় নজরের ক্ষমা নেই।''(আহমাদ,তিরমিযী, আবু দাউদ, দারেমী)

হযরত জারীর ইবনে আবদুল্লাহ বাজালী বলেন, আমি নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে জিজ্ঞেস করলাম, হঠাৎ চোখ পড়ে গেলে কি করবো৷ বললেন, চোখ ফিরিয়ে নাও অথবা নামিয়ে নাও। (মুসলিম, আহমাদ, তিরমিযী, আবু দাউদ, নাসাঈ) আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ রাদিয়ালাহু আনহু রেওয়ায়াত করেছেন, নবী (সা) আল্লাহর উক্তি বর্ণনা করেছেনঃ

''দৃষ্টি হচ্ছে ইবলীসের বিষাক্ত তীরগুলোর মধ্য থেকে একটি তীর, যে ব্যক্তি আমাকে ভয় করে তা ত্যাগ করবে আমি তার বদলে তাকে এমন ঈমান দান করবো যার মিষ্টি সে নিজের হৃদয়ে অনুভব করবে''। (তাবারানী)

আবু উমামাহ রেওয়ায়াত করেছেন, নবী (সা) বলেনঃ

'' যে মুসলমানের দৃষ্টি কোন মেয়ের সৌন্দর্যের ওপর পড়ে এবং এ দৃষ্টি সরিয়ে নেয়, এ অবস্থায় আল্লাহ তার ইবাদাতে বিশেষ স্বাদ সৃষ্টি করে দেন।'' (মুসনাদে আহমাদ)