Monday, June 18, 2012

জামা'আতে সালাত আদায়

★আবু হুরাইরাহ (রাঃ) হতে বর্ণিত, রাসুল (সঃ) বলেছেন ঃ " যে ব্যাক্তি সকালে বা সন্ধ্যায় যতবার মাসজিদে যায় , আল্লাহ্‌ তা'আলা তাঁর জন্য জান্নাতে ততবার মেহমানদারীর ব্যাবস্থা করে রাখেন" [বুখারী ৬৬২]

★আবু হুরাইরাহ (রাঃ) হতে বর্ণিত, রাসুল (সঃ) বলেছেন ঃ " কোন ব্যাক্তির জামা'আতের সাথে সালাতের সওয়াব , তাঁর নিজের ঘরে ও বাজারে আদায়কৃত সালাতের সওয়াবের চেয়ে পঁচিশ গুন বাড়িয়ে দেয়া হয়। এর কারণ এই যে, সে যখন উত্তমরূপে ওযু করে, একমাত্র সালাতের উদ্দেশ্য মাসজিদে রওনা হয় তখন তাঁর প্রতি কদমের বিনিময়ে একটি মরতবা বৃদ্ধি করা হয় এবং একটি গুনাহ মাফ করা হয়। সালাত আদায়ের পর যতক্ষন সে নিজ সালাতের স্থানে থাকে ততক্ষন মালাকগন তাঁর জন্য এ বলে দুয়া করতে থাকেন - ' হে আল্লাহ্‌! আপনি তাঁর উপর রহমত বর্ষণ করুন এবং তাঁর প্রতি অনুগ্রহ করুন' আর তোমাদের কেউ যতক্ষন সালাতের অপেক্ষায় থাকে ততক্ষন সে সালাতে রত বলে গন্য হয় " [ বুখারী ৬৪৭]

★আবু মুসা ( রাঃ) হতে বর্ণিত, নাবী (সঃ) বলেছেন ঃ " (মাসজিদ হতে) যে যত অধিক দূরত্ব অতিক্রম করে আসে, তাঁর তত অধিক পুন্য হবে। আর যে ব্যাক্তি ইমামের সঙ্গে সালাত আদায় করা পর্যন্ত অপেক্ষা করে , তাঁর পুন্য সে ব্যাক্তির চেয়ে অধিক , যে একাকী সালাত আদায় করে ঘুমিয়ে পড়ে। " [ বুখারী ৬৫১]

আবূ হুরায়রা (রা:) নবী (সা:) থেকে বর্ণনা করেছেন, তিনি বলেছেন: “কোন ব্যক্তি সকাল সন্ধ্যায় যতবার মসজিদে যাতায়াত করে, আল্লাহ্ তার জন্য জান্নাতে ততবারে মেহমানদারীর সামগ্রী তৈরী করে রাখেন।” [বুখারী:... ৬৬২]

আবু হুরায়রা (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, মসজিদ হতে যার অবস্থান (বাসস্থান) যতদূরে, সে তত অধিক ছওয়াবের অধিকারী। (ইবনে মাজাহ-৫৫৬)

“সুতরাং দুর্ভোগ সে সব নামাযীর জন্য, যারা তাদের নামাযের ব্যাপারে উদাসীন।” (সুরা মাউন ৪-৫)


Saturday, June 2, 2012

আয়াতুল কুরসী

আবূ উমামা রাদিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণনা করেন, তিনি বলেন: আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন: “যে ব্যক্তি প্রতি ফরয নামায শেষে আয়াতুল কুরসী পড়ে, তার জান্নাতে প্রবেশ করতে মৃত্যু ছাড়া কোন কিছু বাধা হবে না।"
সুনানে কুবরা,নাসায়ী,হাদীস নং ৯৯২৮
আলমুজামুল কাবীর, তবারানী ,হাদীস : ৭৫৩২
আলমুজামুল আওসাত, তবারানী (হাদীস : ৮০৬৪)
আততারগীব ওয়াততারহীব,মুনযিরী, হাদীস : ২৩৭৬
মাজমাউয যাওয়াইদ ১০/১২৮

লা -ইলাহা ইল্লাল্লাহু

“কোন মুসলমান যখন ‘লা -ইলাহা ইল্লাল্লাহু‘ (আল্লাহ ছাড়া কোন মাবুদ নেই) বলে তখন বাক্যটি আকাশসমূহ ছেদ করে যায়, এমনকি তা আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা’আলার সামনে গিয়ে পৌঁছে।

আল্লাহ্ সুবহানাহু ওয়া তা’আলা তখন বলেন: “স্থির হও”; তখন বাক্যটি বলে, “আমি কি-করে স্থির হব?- যে আমাকে উচ্চারন করেছে, এখনও তাকে মাফ করা হয়নি!”

আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা’আলা তখন বলেন: “আমি তোমাকে এমন লোকের জিহ্বা দিয়ে উচ্চারন করিয়েছি; উচ্চারনের আগেই যাকে মাফ করে দিয়েছি”

[হাদীসে কুদসী]

মিথ্যা সাক্ষ্য দেয়া হারাম

আবূ বাকারাহ্ নুফাই’ বিন হারেস রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন: “আমি কি তোমাদেরকে সবচেয়ে বড় ও মারাত্মক গোনাহ্ সম্পর্কে বলবো না? এ কথাটা তিনি তিনবার বললেন। আমরা বললাম: অবশ্যই বলুন, হে আল্লাহর রাসূল! তিনি বললেন: আল্লাহর সাথে শির্ক করা, পিতামাতার অবাধ্যতা; তিনি হেলান দিয়ে ছিলেন, অতঃপর (সোজা হয়ে) বসে বললেন: সাবধান! মিথ্যা কথা বলা এবং মিথ্যা সাক্ষ্য দেয়া। এ কথাটি তিনি বার বার বলতে ছিলেন, এমনকি আমরা বলতে লাগলাম- আহা! যদি তিনি থেমে যেতেন।” [মুত্তাফাকুন 'আলাইহি, বুখারী: ৫৯৭৬, মুসলিম: ৮৭]

জাহান্নামের সবচেয়ে লঘু শাস্তি

নু’মান ইবনে বাশীর রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লামকে বলতে শুনেছিঃ “কেয়ামতের দিন জাহান্নামীদের মধ্যে সবচাইতে লঘু শাস্তি প্রাপ্ত ব্যক্তির শাস্তি হবে এই যে, তার দুই পায়ের তালুর নিচে আগুনের দু’টি অংগার রাখা হবে এবং তাতে তার মস্তিষ্ক সিদ্ধ হতে থাকবে। সে মনে করবে, তার চাইতে কঠিন শাস্তির মুখোমুখি আর কেউ হয়নি। অথচ সে-ই জাহান্নামীদের মধ্যে সবচাইতে হালকা/কম শাস্তিপ্রাপ্ত।” (ইমাম বুখারী: ৬৫৬২ ও ইমাম মুসলিম: ২১৩ এ হাদীস উদ্ধৃত করেছেন)

হাশরের ময়দানে মানুষ তিন দলে বিভক্ত হবে


আবূ হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন: কেয়ামতের দিন লোকদেরকে তিনটি দলে বিভক্ত করে একত্রিত করা হবে। (প্রথম দল- আল্লাহর রহমতের) আশাবাদী এবং (তাঁর আযাবের) ভয়ে ভীত। (দ্বিতীয় দল-সেসব লোক) যাদের দু’জন থাকবে এক উটের উপর, কোন উটের উপর তিনজন, কোনটির উপর চারজন, আর কোনটির উপর সওয়ার হবে দশ জন। (তৃতীয় দল হবে) অবশিষ্টরা, আগুন যাদেরকে তাড়িয়ে নিয়ে যাবে। তারা যেখানে শয়ন করবে আগুনও তাদের সাথে থাকবে, তারা যেখানে রাত্রি যাপন করবে আগুন তাদের সাথে রাত কাটাবে, যেখানে তাদের সকাল হবে আগুন তাদের সাথে থাকবে, আর যেখানে তাদের সন্ধ্যা হবে একই সাথে আগুনও তাদের সাথে সাথে থাকবে।” [বুখারী: ৬৫২২]

গোসল


গোসলের ফরয তিনটিঃ

১. ভালভাবে একবার কুলি করা।
(সূরা মায়িদা, আয়াত নং ৬)
২. নাকের নরম স্থান পর্যন্ত একবার পানি পৌঁছানো।
(ঐ)
৩. সমস্ত শরীরে একবার পানি পৌঁছে দেয়া, যেন কোথাও এক চুল পরিমাণ শুকনো না থাকে।
(ঐ/ তিরমিযী, ১০৩; আল বাহরুর রায়িক, ১ : ৪৫/ শামী, ১ : ১৫১)


গোসলের সুন্নাতসমূহঃ

১. ফরয গোসলের পূর্বে ইস্তিঞ্জা অর্থাত পেশাব করা।
(মুসান্নাফে আব্দুর রাজ্জাক, হাঃ নং ১০২০)
২. শুরুতে বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহীম পড়া।
(মুসনাদে আহমাদ, হাঃ নং ১২৬৯৪)
৩. পৃথকভাবে উভয় হাত কব্জিসহ ধোয়া।
(বুখারী শরীফ, হাঃ নং ২৪৮)
৪. শরীর বা কাপড়ের কোন স্থানে নাপাকী লেগে থাকলে প্রথমে তা তিনবার ধুয়ে পবিত্র করে নেয়া।
(মুসলিম শরীফ, হাঃ নং ৩২১)
৫. নাপাকী লেগে থাকলে বা না লেগে থাকলে সর্ব অবস্থায় গুপ্তাঙ্গ ধৌত করা। এরপর উভয় হাত ভালভাবে ধুয়ে নেয়া।
(বুখারী শরীফ, হাঃ নং ২৪৯)
৬. সুন্নাত তরীকায় পূর্ণ উযু করা। তবে গোসলের স্থানে পানি জমে থাকলে, গোসল শেষ করে পা ধৌত করবে।
(বুখারী শরীফ, হাঃ নং ২৬০)
৭. প্রথমে মাথায় পানি ঢালা।
(বুখারী শরীফ, হাঃ নং ২৫৬)
৮. এরপর ডান কাঁধে।
(বুখারী শরীফ, হাঃ নং ২৫৪)
৯. এরপর বাম কাঁধে।
(বুখারী শরীফ, হাঃ নং ২৫৪)
১০. অতঃপর অবশিষ্ট শরীর ভিজানো।
(বুখারী শরীফ, হাঃ নং ২৭৪)
১১. সমস্ত শরীরে এমনভাবে তিনবার পানি পৌঁছানো, যেন একটি পশমের গোড়াও শুষ্ক না থাকে।
(আবু দাউদ, হাঃ নং ২৪৯/ মুসান্নাফে ইবনে আবী শাইবা, হাঃ নং ৮১৩)

তবে নদী-পুকুর ইত্যাদিতে গোসল করলে কিছুক্ষণ ডুব দিয়ে থাকলেই তিন বার পানি ঢালার সুন্নাত আদায় হয়ে যাবে।
(আবু দাউদ, হাঃ নং ২৪৯/ মুসান্নাফে ইবনে আবী মাইবা, হাঃ নং ৮১৩)
১২. সমস্ত শরীর হাত দ্বারা ঘষে-মেজে ধৌত করা।
(তিরমিযী, হাঃ নং ১০৬)

যে ব্যক্তি যাকে ভালোবাসে সে তার সঙ্গেই থাকবে

আনাস (রা) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, এক ব্যক্তি রাসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর নিকট এসে বললঃ ইয়া রাসূল্লাল্লাহ, কিয়ামত সংঘটিত হবে কবে ?
রাসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) সালাতে দাঁড়িয়ে গেলেন। সালাত সম্পাদন করে বললেনঃ কিয়ামত সংঘটিত হবার ব্যপারে প্রশ্নকারী কোথায় ?
লোকটি বললঃ হে আল্লাহর রাসূল, আমি।
তিনি বললেনঃ কিয়ামতের জন্য তুমি কি প্রস্তুতি নিয়েছ ?
লোকটি বললঃ ইয়া রাসূলাল্লাহ, খুব বেশী সালাত বা সাওম নিয়ে এর জন্য আমি প্রস্তুত হতে পারি নাই তবে, আমি আল্লাহ্ ও তাঁর রাসূল কে ভালোবাসি।
রাসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেনঃ যে ব্যক্তি যাকে ভালোবাসে সে তার সঙ্গেই থাকবে। আর তুমিও তার সঙ্গেই থাকবে যাকে তুমি ভালোবাস।

আনাস (রা) বলেন, এই কথা শুনে মুসলিমদের যে আনন্দ হয়েছিল এর পর আর কোন বিষয়ে মুসলিমদেরকে এত আনন্দিত হতে আমি দেখিনি।
[তিরমিযী, ২৩৮৮]