Monday, January 23, 2012

হাদিস

মুহাম্মদ ইবন মুসান্না [রা]... ইবন মাস'ঊদ [রা]... থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি নবী করীম [সা]- কে বলতে শুনেছি, কেবল মাত্র দু'ধরনের ব্যক্তির প্রতি ঈর্ষা রাখা যেতে পারে, একজন এমন ব্যক্তি যাকে আল্লাহ সম্পদ দিয়াছেন এবং ন্যায়পথে তা ব্যয় করার মত ক্ষমতাবান বানিয়েছেন। অপরজন এমন ব্যক্তি যাকে আল্লাহ দীনের জ্ঞান দান করেছেন সে অনুযায়ী ফয়সালা দেন ও অন্যান্যকে তা শিক্ষা দেন। [সহীহ বুখারীঃ ১৩২৬]
 
রাসূলুল্লাহ সল্লাল্লাহুআলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন:  "তোমাদের দিনসমূহের মধ্যে সর্বশ্রেষ্ট দিন হলো জুমার দিন ॥ এই দিনে আদমকে সৃষ্টি করা হয়েছে ॥ এই দিনে তাকে মৃত্যু দেয়া হয়েছে॥ এই দিনে শিংগায় ফুঁ দেয়া হবে ॥ এবং মহাবিপর্যয় (কিয়ামত) ঘটবে এই দিনেই ॥ তাই, এই দিনে তোমরা বেশি বেশি আমার উপর দরূদ পাঠ করবে ॥ কারন, তোমাদের দরূদ আমার কাছে পৌছে দেয়া হয় ॥ [আবু দাউদ, নাসাঈ]
 
রাসূলুল্লাহ সল্লাল্লাহুআলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন:  "যে ব্যাক্তি বলবে- 'সুবহানাল্লাহিল আ'যীমি ওয়াবিহামদিহী' (মহান আল্লাহ তায়ালার পবিত্রতা বর্ননা করছি এবং তার প্রশংসা ও জ্ঞাপন করছি) তার জন্য বেহেশতে ১ টি গাছ লাগানো হবে" [তিরমিযী]

রাসূলুল্লাহ সল্লাল্লাহুআলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন:  "এই কালেমাগুলো আমার মুখে উচ্চারিত হওয়া সূর্য যে সমস্ত জিনিসের উপর উদিত হয়, সেই সমস্ত জিনিস অপেক্ষা অধিকতর প্রিয় ॥ অর্থাত্‍, দুনিয়ার সকল জিনিস অপেক্ষা এই কালেমাগুলো আমার মুখে উচ্চারিত হওয়া অধিকতর প্রিয়" কালেমাগুলো :
'সুবহানাল্লাহি, ওয়াল হামদুলিল্লাহি, ওয়ালা ইলাহা ইল্লাল্লাহু, ওয়াল্লাহু আকবার' (আমি আল্লাহ তায়ালার পবিত্রতা বর্ননা করছি, সমস্ত প্রকার প্রশংসা আল্লাহ তায়ালার জন্য, তিনি ব্যতীত সত্যিকার কোন মাবুদ নেই, তিনি সর্বশ্রষ্ঠ) [মুসলিম]
 
রাসূলুল্লাহ সল্লাল্লাহুআলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন:  "যে ব্যক্তি দিনে ১০০ বার 'সুবহানাল্লাহি ওয়াবিহামদিহী' পাঠ করবে- তার গুনাহ সমূহ মুছে ফেলা হয়, যদি ও তা সমুদ্রের ফেনারাশির সমান হয়" [বুখারী, মুসলিম]
 
হযরত আবু সাঈ’দ রদিয়াল্লহু আ’নহু (أبىْ سعيْد رضى الله عنْه) বলেন, একবার রসুলুল্লহ সল্লাল্লহু আ’লাইহি ওয়া সাল্লাম নামাযের জন্য মাসজিদে আসিলেন। দেখিলেন যে, হাসির কারণে কিছু লোকের দাঁত দেখা যাইতেছে। রসুলুল্লহ সল্লাল্লহু আ’লাইহি ওয়া সাল্লাম এরশাদ করিলেন, যদি তোমরা স্বাদবিনষ্টকারী মৃত্যুকে বেশী বেশী স্মরণ করিতে তবে তোমাদের এই অবস্থা হইত না যা আমি দেখিতেছি। সুতরাং স্বাদবিনষ্টকারী মৃত্যুকে বেশী বেশী স্মরণ কর। কেননা কবরের উপর এমন কোনদিন যায় না যেদিন সে এই আওয়াজ দেয় না যে, আমি অপরিচিতের ঘর, আমি একাকিত্বের ঘর, আমি মাটির ঘর, আমি পোকামাকড়ের ঘর। যখন মুমিন বান্দা কে দাফন করা হয় তখন কবর তাহাকে বলে, তোমার আগমন বরকতময় হউক। খুব ভাল করিয়াছ যে তুমি আসিয়া গিয়াছ। যত লোক আমার উপর চলাফেরা করিত তাহাদের সকলের মধ্যে তুমিই আমার নিকট সবচেয়ে বেশী পছন্দনীয় ছিলে। আজ যখন তোমাকে আমার সোপর্দ করা হইয়াছে এবং আমার নিকট আসিয়াছ তখন আমার উত্তম ব্যবহারও দেখিতে পাইবে। অতঃপর যতদূর পর্যন্ত মৃত ব্যক্তির দৃষ্টি পৌঁছিতে পারে কবর তাহার জন্য প্রশস্ত হইয়া যায়। এবং তাহার জন্য একটা দরজা জান্নাতের দিকে খুলিয়া দেওয়া হয়।

আর যখন কোন গুনাহগার অথবা কাফেরকে কবরে রাখা হয় তখন কবর বলে, তোমার আগমন বরকতময় না হউক, তুমি আসিয়াছ খুব মন্দ করিয়াছ, যত লোক আমার উপর চলাফেরা করিতে তাহাদের সকলের মধ্যে তোমার প্রতিই আমার বেশী ঘৃণা ছিল। আজ যখন তুমি আমার সোপর্দ হইয়াছ, তখন আমার দুর্বাব্যহারও দেখিতে পাইবে। অতঃপর কবর তাহাকে এমনভাবে চাপ দেয় যে, একদিকের পাঁজর অন্য দিকের পাঁজরে ঢুকিয়া যায়। রসুলুল্লহ সল্লাল্লহু আ’লাইহি ওয়া সাল্লাম একহাতের আঙ্গুলসমূহ অন্য হাতের আঙ্গুলসমূহের মধ্যে ঢুকাইয়া বলিলেন যে, এইভাবে একদিকের পাঁজর অন্যদিকে ঢুকিয়া যায়। আর আল্লহ তায়া’লা তাহার উপর এমন সত্তরটি অজগর সাপ নিযুক্ত করিয়া দেন যাহার মধ্য হইতে একটিও যদি জমিনের উপর শ্বাস ফেলে তবে উহার (বিষের) প্রভাবে কিয়ামাত পর্যন্ত জমিনে ঘাস উৎপন্ন হওয়া বন্ধ হইয়া যাইবে। উহারা তাহাকে কিয়ামাত পর্যন্ত কামড়াইতে ও দংশন করিতে থাকিবে। নবী করীম সল্লাল্লহু আ’লাইহি ওয়া সাল্লাম এরশাদ করিয়াছেন, কবর জান্নাতের একটি বাগান হইবে অথবা জাহান্নামের একটি গর্ত। (তিরমিযী)

মুন্তাখাব হাদিস (দারুল কিতাব, জানুয়ারী ২০০২) পৃষ্ঠা ১১৭-১১৮

No comments:

Post a Comment