Thursday, January 12, 2012

ইসলামে নারীর যৌন অধিকার

আবুহুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত:
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন, ঈমানওয়ালাদের মধ্যে পরিপূর্ণ মুমিন সেই ব্যক্তি, যার আচার-আচরণ উত্তম। আর তোমাদের মাঝে তারাই উত্তম যারা আচার-আচরণে তাদের স্ত্রীদের কাছে উত্তম। [তিরমিযি, হাদিস নং ১০৭৯]

আবু হুরাইরা (রা.) হতে বর্ণিত:
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন, মুমিন মু’মিনা(স্ত্রী)র প্রতি বিদ্বেষ রাখবে না। যদি তার একটি অভ্যাস অপছন্দনীয় হয় তবে আরেকটি অভ্যাস তো পছন্দনীয় হবে। [মুসলিম হাদিস নং- ১৪৬৯, ২৬৭২]

আয়িশা (রা.) হতে বর্ণিত:
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন, ঈমানওয়ালাদের মধ্যে পরিপূর্ণ মুমিন সেই ব্যক্তি যার আচার-আচরণ উত্তম এবং নিজ পরিবারের জন্য অনুগ্রহশীল। [তিরমিযি, হাদিস নং- ২৫৫৫]

আনাস বিন মালিক (রা.) থেকে বর্ণিত:
নবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, যখন পুরুষ তার স্ত্রীর সাথে সহবাস করে তখন সে যেন পরিপূর্ণভাবে (সহবাস) করে। আর তার যখন চাহিদা পূরণ হয়ে যায় (শুক্রস্খলন হয়) অথচ স্ত্রীর চাহিদা অপূর্ণ থাকে, তখন সে যেন তাড়াহুড়া না করে। [মুসান্নাফে আব্দুর রাজ্জাক, হাদিস নং-১০৪৬৮]

আবু মুসা আশয়ারী (রা.) থেকে বর্ণিত:
হযরত ওসমান ইবনে মাযউন (রা.) এর স্ত্রী মলিন বদন এবং পুরাতন কাপড়ে নবী করিম (সা.) এর বিবিদের কাছে এলেন। তাঁরা তাকে জিজ্ঞাসা করলেন, তোমার এই অবস্থা কেন? কুরাইশদের মাঝে তোমার স্বামী থেকে ধনী কেউ নেই। তিনি বললেন, এতে আমাদের কি হবে? কেননা আমার স্বামীর রাত নামাযে কাটে ও দিন রোযায় কাটে। তারপর নবী করিম (সা.)প্রবেশ করলেন। তখন নবীজীর স্ত্রীগণ বিষয়টি তাকে বললেন। অত:পর হযরত ওসমান ইবনে মাযউন (রা.) এর সাথে সাক্ষাত হলে তিনি তাকে বললেন,-“আমার মধ্যে কি তোমার জন্য কোন আদর্শ নাই?”হযরত ওসমান (রা.) বললেন, কী বলেন ইয়া রাসূলুল্লাহ? আমার পিতামাতা আপনার জন্য উৎসর্গিত! তখন তিনি বললেন-“তবে কি তোমার রাত নামাযে আর দিন রোযায় কাটে না? অথচ তোমার উপর তোমার পরিবারের হক রয়েছে, আর তোমার উপর তোমার শরীরেও হক রয়েছে, তুমি নামাযও পড়বে, আবার ঘুমাবেও, আর রোযাও রাখবে আবার ভাঙ্গবেও”। তিনি বললেন তারপর আরেকদিন তার স্ত্রী পরিচ্ছন্ন ও সুগন্ধিত অবস্থায় এলেন যেন নববধু। [মাজমায়ে জাওয়ায়েদ, হাদিস নং ৭৬১২; সহীহ ইবনে হিব্বান, হাদিস নং-৩১৬]

আবু জুহাইফা (রা.) বলেন:
নবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) সালমান (রা.) এবং আবু দারদা (রা.) এর মধ্যে ভ্রাতৃত্ব বন্ধন স্থাপন করেছিলেন। সালমান (রা.) আবু দারদা (রা.) এর সাথে সাক্ষাত করতে গেলেন আর উম্মে দারদা (রা.) [আবু দারদা (রা.)এর স্ত্রী]-কে ময়লা কাপড় পরিহিত অবস্থায় দেখতে পেলেন এবং তাকে তার ঐ অবস্থার কারণ জিজ্ঞাসা করলেন। তিনি বললেন, “আপনার ভাই আবু দারদার দুনিয়ার চাহিদা নাই”। এর মধ্যে আবু দারদা এলেন এবং তার (সালমানের) জন্য খাবার তৈরি করলেন আর বললেন, “খাবার গ্রহণ করো কারণ আমি রোযা আছি”। সালমান(রা.) বললেন, “তুমি না খেলে আমি খাচ্ছি না”। কাজেই আবু দারদা(রা.) খেলেন। যখন রাত হলো, আবু দারদা (রা.) উঠে পড়লেন (রাতের নামায পড়ার জন্য)। সালমান (রা.) বললেন, “ঘুমাও”; তিনি ঘুমালেন। পুনরায় আবু দারদা উঠলেন (নামাযের জন্য), আর সালমান (রা.) বললেন, “ঘুমাও”। রাতের শেষ দিকে সালমান (রা.) তাকে বললেন, “এখন ওঠো (নামাযের জন্য)”। কাজেই তারা উভয়ে নামায পড়লেন এবং সালমান (রা.) আবু দারদা (রা.)কে বললেন, “তোমার ওপর তোমার রবের হক রয়েছে; তোমার ওপরে তোমার আত্মার হক রয়েছে, তোমার ওপর তোমার পরিবারের হক রয়েছে; কাজেই প্রত্যেককে তার প্রাপ্য হক প্রদান করা উচিত”। পরে আবু দারদা (রা.) নবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর সাথে সাক্ষাত করলেন এবং একথা তার কাছে উল্লেখ করলেন। নবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, “সালমান সত্য বলেছে।” [বুখারি, হাদিস নং -১৮৬৭]


হযরত আবদুল্লাহ ইবনে আমর (রা.) বলেন, আমার পিতা একজন কুরাইশি মেয়ের সাথে আমাকে বিয়ে করিয়ে দিলেন। উক্ত মেয়ে আমার ঘরে আসল। আমি নামায রোযা ইত্যাদি এবাদতের প্রতি আমার বিশেষ আসক্তির দরুণ তার প্রতি কোন প্রকার মনোযোগ দিলাম না। একদিন আমার পিতা- আমর ইবনে আস (রা.) তার পুত্রবধুর কাছে এসে জিজ্ঞাসা করলেন, তোমার স্বামীকে কেমন পেয়েছ? সে জবাব দিল, খুবই ভালো লোক অথবা বললো খুবই ভালো স্বামী। সে আমার মনের কোন খোঁজ নেয় না এবং আমার বিছানার কাছেও আসে না। এটা শুনে তিনি আমাকে খুবই গালাগাল দিলেন ও কঠোর কথা বললেন এবং বললেন, আমি তোমাকে একজন কুরাইশি উচ্চ বংশীয়া মেয়ে বিয়ে করিয়েছি আর তুমি তাকে এরূপ ঝুলিয়ে রাখলে? তিনি নবী করিম (সা.) এর কাছে গিয়ে আমার বিরূদ্ধে নালিশ করলেন। তিনি আমাকে ডাকালেন। আমি উপস্থিত হলে তিনি জিজ্ঞাসা করলেন, তুমি কি দিনভর রোযা রাখ? আমি বললাম হ্যাঁ। তিনি জিজ্ঞাসা করলেন, তুমি কি রাতভর নামায পড়? আমি বললাম হ্যাঁ। তিনি বললেন, কিন্তু আমি রোযা রাখি ও রোযা ছাড়ি, নামায পড়ি ও ঘুমাই, স্ত্রীদের সাথে মেলামেশা করি। যে ব্যক্তি আমার সুন্নতের প্রতি আগ্রহ রাখে না সে আমার দলভুক্ত না। [মুসনাদে আহমাদ, হাদিস নং- ৬৪৪১]


 কাতাদাহ (রহ.) বলেন, একজন মহিলা উমর (রা.)-এর কাছে এসে বললেন, আমার স্বামী রাতভর নামায পড়েন এবং দিনভর রোযা রাখেন। তিনি বললেন, তবে কি তুমি বলতে চাও যে, আমি তাকে রাতে নামায পড়তে ও দিনে রোযা রাখতে নিষেধ করি? মহিলাটি চলে গেলেন। তারপর আবার এসে পূর্বের ন্যায় বললেন। তিনিও পূর্বের মতো উত্তর দিলেন। কা’ব বিন সূর (রহ.) বললেন, আমিরুল মু’মিনিন, তার হক রয়েছে। তিনি জিজ্ঞাসা করলেন, কীরূপ হক? কা’ব (রহ.) বললেন, কা’ব (রহ.) বললেন, আল্লাহ তাআলা তার জন্য চার বিবাহ হালাল করেছেন। সুতরাং তাকে চারজনের একজন হিসেব করে প্রত্যেক চার রাতের এক রাত তার জন্য নির্ধারিত করে দিন। আর প্রত্যেক চার দিনের একদিন তাকে দান করুন। উমর(রা.) তার স্বামীকে ডেকে বলে দিলেন যে, প্রতি চার রাতের একরাত তার কাছে যাপন করবে এবং প্রতি চারদিনের একদিন রোযা পরিত্যাগ করবে। [মুসান্নাফে আব্দুর রাজ্জাক, হাদিস নং: ১২৫৮৮]



কাতাদাহ (রহ.) বলেন, একজন মহিলা উমর (রা.)-এর কাছে এসে বললেন, আমার স্বামী রাতভর নামায পড়েন এবং দিনভর রোযা রাখেন। তিনি বললেন, তবে কি তুমি বলতে চাও যে, আমি তাকে রাতে নামায পড়তে ও দিনে রোযা রাখতে নিষেধ করি? মহিলাটি চলে গেলেন। তারপর আবার এসে পূর্বের ন্যায় বললেন। তিনিও পূর্বের মতো উত্তর দিলেন। কা’ব বিন সূর (রহ.) বললেন, আমিরুল মু’মিনিন, তার হক রয়েছে। তিনি জিজ্ঞাসা করলেন, কীরূপ হক? কা’ব (রহ.) বললেন, কা’ব (রহ.) বললেন, আল্লাহ তাআলা তার জন্য চার বিবাহ হালাল করেছেন। সুতরাং তাকে চারজনের একজন হিসেব করে প্রত্যেক চার রাতের এক রাত তার জন্য নির্ধারিত করে দিন। আর প্রত্যেক চার দিনের একদিন তাকে দান করুন। উমর(রা.) তার স্বামীকে ডেকে বলে দিলেন যে, প্রতি চার রাতের একরাত তার কাছে যাপন করবে এবং প্রতি চারদিনের একদিন রোযা পরিত্যাগ করবে। [মুসান্নাফে আব্দুর রাজ্জাক, হাদিস নং: ১২৫৮৮]


No comments:

Post a Comment