হযরত আনাস ইবনে মালেক (রা) নবী করীম (ছ) থেকে বর্ণনা করেছেন। তিনি বলেছেন, কেউ কোন নামাযের কথা ভুলে গেলে তা স্মরণ হওয়া মাত্র আদায় করে নিবে। ঐ নামাযের এটা ছাড়া অন্য কোন কাফফারা নেই। কেননা, আল্লাহ বলেন, আমাকে স্মরণের জন্য নামায কায়েম কর।
[বোখারী শরীফ ¤ ৫৬২]
হযরত আবুযার জুনদুব ইবন জুনাদা রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মহান আল্লাহ থেকে বর্ণনা করেছেন যে,
তিনি বলেনঃ “হে আমার বান্দারা ! আমি নিজের উপর যুলুমকে হারাম করে রেখেছি এবং তোমাদের মধ্যেও তা হারাম করেছি। কাজেই তোমরা পরস্পর যুলুম করোনা। হে আমার বান্দারা ! আমি যাকে হিদায়াত করেছি সে ছাড়া তোমাদের প্রত্যেকেই পথভ্রষ্ট। কাজেই আমার কাছে হিদায়াত চাও,
আমি তোমাদেরকে হিদায়াত দেব। হে আমার বান্দারা ! আমি যাকে খাদ্য দিয়েছি সে ছাড়া তোমাদের প্রত্যেকেই ক্ষুধার্ত। কাজেই আমার কাছে খাদ্য চাও,
আমি তোমাদেরকে খাদ্য দেব। হে আমার বান্দারা ! আমি যাকে কাপড় দিয়েছি সে ছাড়া তোমাদের প্রত্যেকেই উলংগ। কাজেই আমার কাছে কাপড় চাও,
আমি তোমাদেরকে কাপড় দেব। হে আমার বান্দারা ! তোমরা রাতদিন ভুল করে থাক,
আর আমি সমস্ত গুনাহ ক্ষমা করে দেই। কাজেই তোমরা আমার কাছে গুনাহ ক্ষমা চাও,
আমি তোমাদেরকে ক্ষমা করে দেব। হেআমার বান্দারা ! তোমরা আমার কোন ক্ষতি করতে পারবেনা,
আমার কোন লাভও করে দিতে পারবেনা। হে আমার বান্দারা ! যদি তোমাদের পূর্বের ও পরের সমস্ত জিন ও মানুষ তোমাদের মধ্যকার শ্রেষ্ঠতম আল্লাহভীরুর হৃদয়ের মত হৃদয় সম্পন্ন হয়ে যায়, তবুও তাতে আমার রাজত্বের এতটুকু মর্যাদা বৃদ্ধি পাবেনা। হে আমার বান্দারা ! যদি তোমাদের পূর্বের ও পরের সমস্ত জিন ও মানুষ তোমাদের মধ্যকার সবচেয়ে খারাপ মানুষের হৃদয়ের মত হৃদয়সম্পন্ন হয়ে যায়,
তবুও তাতে আমার রাজত্বের এতটুকু মর্যাদা ক্ষুণ্ণ হবেনা।
হে আমার বান্দারা
!
যদি তোমাদের পূর্বের ও পরের সমস্ত জিন ও মানুষ কোন এক ময়দানে দাঁড়িয়ে আমার কাছে একত্রে চায় এবং আমি প্রত্যেককে তার চাহিদা পূরণ করে দেই,
তাহলে তাতে আমার কাছে যে ভাণ্ডার রয়েছে তার এতটুকু কমে যায় যতটুকু সমুদ্রে একটি সুঁচ ফেললে তার পানি কমে যায়। হে আমার বান্দারা
! আমি তোমাদের নেক আমলকে তোমাদের জন্য জমা করে রাখছি,
তারপর আমি তোমাদেরকে তার পূর্ণ বিনিময় দেব। কাজেই যে ব্যক্তি কোন কল্যাণপায়,
সে যেন আল্লাহর প্রশংসা করে। আর যে ব্যক্তি অন্য কিছু পায়,
সে যেন নিজেকেই তিরস্কার করে।(মুসলিম), [রিয়াদুসসালেহীন ; প্রথমখণ্ড, হাদীসনং-১১১]
রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, “দু’ শ্রেণীর মানুষ জাহান্নামী হবে-
যারা গরুর লেজসদৃশ বেতদ্বারা মানুষকে প্রহার করে এবং যেসব নারী এত পাতলা পোশাক পরিধান করে যে তার ভেতর দিয়ে শরীরের অংশ দেখা যায় এবং অহংকারীরবেশে হেলে দুলে পথ চলে। এনারী জান্নাতের সুঘ্রাণও পাবেনা,
যা বহুদূর থেকে পাওয়া যায়।”
(মুসলিম)
আবুল আব্বাস সাহলবিনসা'দআস্-সা'ইদীরাদিয়াল্লাহু 'আনহু হতে বর্ণিত, তিনি বলেছেন:"এক ব্যক্তি নবী সাল্লাল্লাহু
'আলাইহি ওয়াসাল্লামের নিকট উপস্থিত হয়ে বলল:
হে আল্লাহর রাসূল!
আমাকে এমন কাজ বলুন যা করলে আল্লাহ্ আমাকে ভালবাসেন,
লোকেরাও আমাকে ভালবাসে। তখন তিনি বললেন:
দুনিয়ার প্রতি অনুরাগী হবেনা,
তাহলে আল্লাহ্ তোমাকে ভালবাসবেন;
আর মানুষের কাছে যা আছে তার ব্যাপারে আগ্রহী হবে না,
তা হলে মানুষও তোমাকে ভালবাসবে।"[ইবনেমাজাহ্: ৪১০২]
রাসুল(সা) বলেছেন, “তোমরা সবচেয়ে অধম লোক দেখতে পাবে সেই ব্যক্তিকে,
যে বিভিন্ন জনের কাছে গিয়ে নিজেকে বিভিন্নভাবে বা বিভিন্ন আকারে প্রকাশ করে। আর যে ব্যক্তি পৃথিবীতে দ্বিমুখী আচরণ করবে
, কিয়ামতের দিন আল্লাহ তাকে দুটি আগুনের জিহ্বা দিবেন।”
[বুখারি,মুসলিম,মুয়াত্তা]
আবদুল্লাহ ইবনে আমর
(রাঃ) হতে বর্ণিত; রাসুলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেন, “সবচেয়ে বড় কবীরাহ গুনাহ হল:
কোন লোকের তার নিজের পিতামাতার উপর অভিশাপ দেয়া” জিজ্ঞাসা করা হল: “ইয়ারাসুলুল্লাহ (সাঃ) কিভাবে একজন লোক তার পিতামাতার উপর অভিশাপ দিতে পারে?”
হুযুর (সাঃ) বলেন: “যখন একজন অপরজনের পিতাকে গালি দেয়,
তখন সেও ঐ লোকের পিতামাতাকে গালি দেয়
(এ ভাবেই নিজের পিতাকে অভিশাপ দেয়া হয়ে যায়)”
(বুখারী)
আবূ আব্দুল্লাহ্ জাবের ইবন আব্দুল্লাহ্ আল-আনসারী (রাদিয়াল্লাহু ‘আনহুমা) হতে বর্ণিত হয়েছে- এক ব্যক্তি রাসূলুল্লাহ্
(সাল্লাল্লাহু
‘আলাইহিওয়াসাল্লাম) কে জিজ্ঞাসা করলেন: আপনি কি মনে করেন যদি আমি ফরয নামায আদায় করি,
রমযানে রোযা রাখি,
হালালকে হালাল বলে ও হারামকে হারাম বলে ঘোষণা করি,
আর এর বেশী কিছু না করি,
তাহলে কি জান্নাতে প্রবেশ করতে পারবো?
তিনিবললেন:
হাঁ। [মুসলিম: ১৫]
No comments:
Post a Comment